কোরবানির পশুর চামড়া কিনে সংরক্ষণের ২১ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত ক্রেতা না আসায় বিক্রি করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এরইমধ্যে অনেক চামড়ায় পচন ধরে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এক সপ্তাহের মধ্যে চামড়া বিক্রি করতে না পারলে ফেলে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না বলেও জানান ব্যবসায়ীরা। এতে চামড়া ব্যবসায়ীরা মহাবিপাকে পড়েছেন।
এদিকে, ট্যানারী মালিকদের নিকট ১০ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় এবং লবণজাতকৃত প্রায় ৮০ হাজার চামড়া অবিক্রিত নিয়ে সংকটে পড়েছেন দিনাজপুরের চামড়া ব্যবসায়ীরা।
এছাড়াও শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে কাচা চামড়াগুলো বিক্রয়সহ ট্যানারী মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া ১০ কোটি টাকা তুলে দেয়ার অনুরোধ জানান তারা।
হাকিমপুরের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী তোরাব আলীসহ কয়েকজন বলেন, হিলির আড়তদারদের কাছে চামড়া বিক্রি করেছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও টাকা-পয়সা পাইনি। মহাজনরাই এখন পর্যন্ত কোনও চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। এ কারণে তারা কোথায় থেকে আমাদের টাকা দেবে। টিভিতে শুনছি, চামড়া কেনা হচ্ছে কিন্তু বাস্তবে কেউ তো চামড়া কিনছেন না। তাহলে কোনটা ঠিক?
হাকিমপুরের মুন্সিপট্টির চামড়া ব্যবসায়ী ইমরান হোসেন বলেন, ট্যানারি মালিকরা বলেছিলেন, ভালো দামে চামড়া কেনাবেচা হবে। সে আশ্বাসে আমরা চামড়া কিনেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও ট্যানারি মালিকরা তো দূরের কথা, অন্য কোনও পার্টিও চামড়া কিনতে আসেনি।
দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের সভাপতি জুলফিকার আলী স্বপন বলেন, বিগত ৫ বছর ধরে চামড়ার ব্যবসায়ে মহাসংকট চলছে। এই ব্যবসা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ট্যানারী মালিকগণ বিভিন্ন অজুহাত প্রদর্শন করে ও একেক সময় একেক কৌশল অবলম্বন করে জোটবদ্ধ হয়ে বাজারমুখী নিম্ন দর সৃষ্টি করে সাধারণ চামড়া ব্যবসায়ীদেরকে সর্বশান্ত করেছে। এরপরেও বকেয়া পাওনা টাকা পরিশোধ করছেন না তারা। বর্তমানে চামড়া নিয়ে আমরা মহাবিপাকে পড়েছি। গুদামজাতকৃত কাচা চামড়াগুলি এখন পর্যন্ত বিক্রি করতে পারছিনা। এই অবস্থা বিরাজমান থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই চামড়াগুলি ফেলে দিতে হবে।
সরকারের দৃষ্টি আকর্ষনসহ তাদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে বৃহস্পতিবার দিনাজপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেন দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপ। সংবাদ সম্মেলনে দিনাজপুর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক গ্রুপের সাবেক সভাপতি মো. সাদিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল খায়ের, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আখতার আজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম, সদস্য মো. মজিবর রহমান, মো. আবেদ আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন