চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ঈদুল আজহায় নিম্নমানের ভিজিএফের চাল বিতরণে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের চার কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি। এতে খোদ তদন্ত কমিটির সদস্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তারও সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার।
অভিযুক্ত কর্মকর্তার হলেন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ মো. রেজাউল ইসলাম, সদর উপজেলা খাদ্য গুদামের ওসি-এলএসডি মো. আবু বকর ছিদ্দিক, জীবননগর উপজেলা খাদ্য গুদামের ওসি-এলএসডি মো. কাওসার আহমেদ ও সদর উপজেলা কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক মো. আনিছুর রহমান।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভিজিএফ কার্ডধারী ৬০০ জনকে খাওয়ার অযোগ্য, দুর্গন্ধযুক্ত ও পঁচা চাল দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান ১০ হাজার ৫৬০ কেজি নিম্নমানের চাল জব্দ করেন। এ ঘটনায় ২৬ জুলাই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনিরা পারভীনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আবু তারেক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা (ডিটিও) সুফি মো. রফিকুজ্জামান, জেলা বাজার তদারকি কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রেজাউল ইসলাম।
এ তদন্তে কমিটির অন্যতম সদস্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে ওই ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টতা মেলে। এ অবস্থায় তাকে বাদ দিয়েই অন্যরা তদন্ত শেষ করেন। তদন্ত কমিটি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রেজাউল ইসলামসহ ১৪ জনের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন।
তদন্ত কমিটি নিশ্চিত হয়েছে, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, দুজন ওসি-এলএসডি ও কারিগরি পরিদর্শক নিম্নমানের চালের বিষয়টি সংগ্রহ থেকে বিতরণ পর্যন্ত জানতেন। সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নে ভিজিএফ কর্মসূচিতে বিতরণকৃত চাল জীবননগর খাদ্যগুদাম থেকে পাঠানো। জীবননগর উপজেলা খাদ্যগুদামের ওসি-এলএসডি মো. কাওসার আহমেদ অসৎ উদ্দেশ্যে যোগসাজশ করে স্থানীয় সাথী রাইস মিল, দেশবাংলা ও এ. অ্যান্ড জে.এম অটোরাইস মিল থেকে সংগ্রহ করেন।
তদন্ত কমিটি মতামত দিয়েছে, ওই চাল নিম্নমানের। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জীবননগর ওসি-এলএসডি, সদর ওসি-এলএসডি ও কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক সবাই চাল নিম্নমানের জানা সত্ত্বেও জীবননগর ও সদর খাদ্যগুদামে গুদামজাত এবং বেগমপুর ইউনিয়নে ভিজিএফ কর্মসূচিতে চালগুলো সরবরাহ করেছেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়া গেছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি শিগগিরই সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল