ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১০ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) চতুর্থ ধাপে আগামীকাল ভোট অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি দলীয় প্রতীকে এই নির্বাচনে অংশ না নিলেও স্বতন্ত্র পরিচয়ে নির্বাচন করছেন দলটির নেতারা। অপরদিকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের ডজনখানেক মনোনয়ন বঞ্চিতরা বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের কোথাও লড়তে হচ্ছে নিজ দলের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে, আবার কোথাও লড়তে হচ্ছে স্বতন্ত্রর মোড়কে অংশ নেয়া বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে একমাত্র সাতৈর ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া মো. মজিবর রহমানের বিপরীতে কোন বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে শুরু থেকেই এগিয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত পেয়েছেনও।
উপজেলার সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের জোরালো মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বোয়ালমারী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল হক শেখ। কেন্দ্রে পাঠানো নামের তালিকায় তার নাম এক নম্বরে ছিল বলে জানা গেছে। কিন্তু তিনি স্থানীয় রাজনীতির কোন্দলের জেরে মনোনয়ন পাননি।
চতুল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক পদ থেকে সদ্য বহিস্কৃত মো. রফিকুল ইসলাম ও বর্তমান চেয়ারম্যান শরীফ মো. সেলিমুজ্জামান লিটু। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদের রেষারেষিতে দুইজনই দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। এই ইউনিয়নে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার মো. আবুল বাশার শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পেয়েছেন। অথচ দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির পূর্বে ইউনিয়নে তিনি কোন প্রচারাভিযানই চালাননি। কেন্দ্রে পাঠানো নামের তালিকায়ও তার নাম প্রথম, দ্বিতীয়তে ছিল না বলে জানা গেছে।
দাদপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদুর রহমান হাই। এই ইউনিয়নে মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান শামীম মোল্যা ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন।
পরমেশ্বরদী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন আ’লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. সোলাইমান মোল্যা। বর্তমান চেয়ারম্যানের মৃত্যুর আগে তিনি ওয়ার্ড মেম্বার পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। উপজেলা আ’লীগের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মান্নান মাতুব্বর এবং আওয়ামী লীগের সমর্থক শরীফ নজরুল ইসলাম এই ইউনিয়নের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
শেখর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কামাল আহমেদ। তিনি রাজনীতিতে একেবারেই নতুন মুখ। সদ্য বহিস্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ছিলেন জোরালো প্রার্থী। গুনবহা ইউনিয়নে আ’লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা কৃষকলীগের যুগ্ম আহবায়ক কামরুল ইসলাম। দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির পূর্বে ইউনিয়নে তার তেমন কোন প্রচারণা চোখে পড়েনি। সদ্য বহিস্কৃত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম এবং জেলা যুবলীগের সদস্য মো. দাউদুজ্জামান মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন।
রূপাপাত ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ সভাপতি মহব্বত আলী। সদ্য বহিস্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং সাবেক চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন। একই অবস্থা ময়নার ক্ষেত্রে। ময়না ইউনিয়নে আ’লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা মৎস্যজীবী লীগের সদস্য পলাশ বিশ্বাস। বর্তমান চেয়ারম্যান নাসির মো. সেলিম জোরালো প্রার্থী ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল