নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার বাণিজ্য নগরী চৌমুহনী বাজারে এক দোকান কর্মচারীর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। নিহত মোবারক হোসেন ওরফে শাওন (২০) ঐ গ্রামের শাহাব উদ্দিনের ছেলে। শনিবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে শ্বশুর কর্মচারির মাধ্যমে লাশ পাঠিয়ে দেয় তাদের বাড়িতে। তিনি উপজেলার হাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ মোবারকের শ্বশুর আবদুল মতিনকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে রবিবার দুপুরে নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাজীপুর গ্রামের শাহাব উদ্দিনের ছেলে মোবারক হোসেন দুই বছর ধরে চৌমুহনী বাজারের হকার্স মার্কেটের তাহেরা ট্রেডার্সে চাকরি করতেন। প্রায় আট মাস আগে মোবারক দোকানের মালিক আবদুল মতিনের পালক মেয়েকে গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে মোবারক স্ত্রী নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। শনিবার সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে দোকানে না গিয়ে মোবারক নিজের বাড়িতে যান। দীর্ঘসময় না ফেরায় শ্বশুর আবদুল মতিন দুপুরে মোবারককে খুঁজতে তাদের বাড়িতে যান। সেখান থেকে মোবারককে কৌশলে দোকানে নিয়ে আসেন তিনি। এরপর সন্ধ্যার দিকে দোকানে মোবারক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন দোকানের অন্য কর্মচারীরা তাঁকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযোগ রয়েছে, মোবারককে নেওয়ার পর তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে শ্বশুর মতিন। নিহতের মা শামছুন নাহারের অভিযোগ, আবদুল মতিন তাঁর ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার পর মোবারককে নিজ বাড়িতে আসতে দিতেন না। কখনো এলে সঙ্গে সঙ্গে লোক পাঠিয়ে নিয়ে যেতেন। শনিবার তাঁর ছেলে বাড়িতে আসার পর দুপুরে মতিন নিজে এসে তাঁর ছেলেকে বাড়ি থেকে নিয়ে যান। পরে সন্ধ্যায় তাঁর দোকানের দুই কর্মচারী এসে ছেলের লাশ বাড়িতে দিয়ে চলে যায়। তিনি তাঁর ছেলের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
এসআই এনামুল হক বলেন, দোকানের সিসিটিভির ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে মোবারককে সেখানে নির্যাতনের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্নও দেখা যায়নি। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দোকান মালিক আবদুল মতিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিহত মোবারকের মা বাদী হয়ে থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছেন।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর জাহেদুল হক রনি জানান, আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা হয়েছে এবং শ্বশুর মতিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল