ভারতের আসামের চেরাপুঞ্জিতে টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি ঢলের প্রভাব পড়েছে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলেও। বৈশাখ আসার আগেই পাহাড়ি ঢলে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে হাওরের খরস্রোতা ধনু নদের পানি বাড়ছে প্রবল বেগে। যে কারণে ফসল রক্ষা বেরিবাঁধগুলো পড়েছে হুমকির মুখে। গত বছর পানি দেরিতে সরার কারণে ১০ থেকে ১৫ দিন পরে জমি রোপন করতে হয়েছে হাওরের কৃষকদের। ফলে জমিতে ধান পাকতেও সময় নিচ্ছে কিছুটা। এদিকে গত দুদিন ধরে ভারতের পানি সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর দিয়ে কিশোরগঞ্জের ইটনা হাওর হয়ে নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে প্রবেশ করছে।
রবিবার ধনু নদের পানিতে তলিয়ে গেছে নদীর কিনারায় চাষকৃত প্রায় দেড়শ একরের মতো ফসল। এদিকে জেলার স্থানীয় প্রশাসন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সাথে নিয়ে গ্রামবাসীর সহায়তায় বাঁধকে শক্তিশালী করতে বাঁশের চাটাইসহ জিও ব্যাগ দিয়েছে।
জানা গেছে, জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার সবচেয়ে বড় এবং ঝুঁকিপূর্ণ ফসল রক্ষা বেরিবাঁধ হচ্ছে সদর ও চাকুয়া ইউনিয়নের মাঝে কীর্তনখোলা বাঁধ। আর এই বাঁধের থেকে রবিবার পর্যন্ত ৬৮ সেন্টিমিটার নীচে রয়েছে পানি। এই পানি বাড়া এবং কমার ব্যাপারটি প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছেন তারা। অন্যদিকে খালিয়াজুরী উপজেলার সীমান্ত চুনাই হাওরে পানি প্রবেশ করেছে বলে জানান হাওর রক্ষা কমিটির নেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার তালজাঙা ইউনিয়নের আকবপুর গ্রামের জনৈক কৃষক হারুণ অর রশিদ খালিয়াজুরী এলাকায় এসে ধনু নদের পারে অর্থাৎ নদীর চরে প্রায় ৪০ একরের মতোন জমিতে আবাদ করেছেন। সেখান থেকে প্রায় ২০ একর জমি ধনু নদের বেড়ে যাওয়া পানিতে তলিয়ে গেছে।
পিআইসি সভাপতি খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম আরিফুল ইসলাম জানান, পাহাড়ি ঢলে ধনু নদীর পানি বাড়লেও এখনো কোন বাঁধের ক্ষতি হয়নি। আর যাতে কোন রকম ক্ষতি না হয় সে জন্য বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ও বাঁশের চাটাই দিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হযেছে। পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও রয়েছে। পানি বাড়লেও সমস্যা নেই বলে জানান তিনি।
তবে কিছু কিছু এলাকায় পানি প্রবেশের খবর পাওয়া গেলেও সেগুলো একেবারে ধনু নদীর পাড়ে যারা রোপন করেছেন তাদের জমির কিছু অংশে পানি আসতে পারে। এগুলো ফোল্ডারের বাইরের। নদীর বুকে চাষ করলে পানি বাড়লে তলাতেই পারে বলে জানান। এসময় তিনি আরো বলেন, আমি পিআইসি সকল কমিটির সভাপতি। বাঁধ ভাঙলে খবর আগে আমি পাবো।
প্রতিটি বাঁধ নদী থেকে বেশ দূরে রয়েছে। ঢলের পানি স্থিতিশীল থাকায় এবং আমাদের বাঁধকে শক্তিশালী করতে কাজ করেছি দুদিন ধরে, রবিবার বিকালে সমাপ্ত হয়েছে। তিনি জানান, ৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বাঁধের মধ্যে কীর্ত্তনখোলা ৭ কিলোমিটার বাঁধের অংশে ডেঞ্জার পয়েন্টের ৬৮ সেন্টিমিটার নীচে আছে পানি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল