বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ-বিএনপির দফায় দফায় সংঘর্ষ, ইট পাটকেলে নিক্ষেপ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতরা গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে গাবতলী উপজেলা সদরে।
জানা গেছে, রবিবার সকাল ১১টায় গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিলটি বেলা পৌনে ১২টার সময় গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোর্শেদ মিল্টন এর বাড়ির সামনে পৌঁছালে বিএনপির সমর্থকরা মিছিলের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ও সড়কের পাশে থাকা আওয়ামী লীগের দলীয় ব্যানার ভাংচুর করতে থাকে। প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া করলে তারা দিগ্বিদিক ছুটে পালিয়ে যায়। প্রথম ধাওয়ার কিছু পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে আবারো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। প্রতিবাদ জানাতে গেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের উপস্থিতিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা চলে যায়।
দ্বিতীয় ধাওয়ার পর কে বা কারা উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় ও ভাংচুর করে। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দুপুর দেড়টার সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা আবারো একযোগে লাঠিসোঠা নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের দিকে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে চাইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ছুঁড়ে পুলিশ সদস্যরা। রাবার বুলেটসহ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় বিএনপি ও আয়ামী লীগের কমপক্ষে ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়।
রাবার বুলেটে আহতরা হলেন গাবতলী পৌর যুবদলের সাবেক আহবায়ক ও পৌর কাউন্সিলর হারুন উর রশীদ (৪০), পৌর যুবদল নেতা সেলিম রেজা (৩২) উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি নেতা এমআর হাসান পলাশ (৩০), ছাত্রদল নেতা মো. আশিক (২৮), আল আমিন (২৫), স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজিবুল ইসলাম হিরু (৩৫), মানিক মুক্তাদির (৩৪), ফুয়াদ হোসেন (৩২) বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আর আওয়ামী লীগের কর্মী মো. সুজন (২৮), আব্দুল মতিন (৩৮), নারী নেত্রী আসমা বেগম (৩৮) মো. লেমন (৩৫) প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেছে গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে। অন্যান্যরা বিভিন্নস্থানে চিকিৎসা গ্রহণ করে।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এআই ফয়সাল খান জনি জানান, তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা অস্ত্রসহ হামলা করে। তাদের হামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আহত হয়েছে। ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী (প্রশাসন) জানান, কতটি রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে তার গণনা চলছে। কাউকে আটক করা যায়নি। মামলাও হয়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণে তৎপর রয়েছে। তবে গাবতলী উপজেলার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা