সুষ্ঠু নির্বাচন দাবিতে কাফনের কাপড় পরে ও হাতে বিষের বােতল নিয়ে ইসির সামনে অবস্থান নেওয়ার ঘটনায় আলোচিত নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার হরনি ও চানন্দি ইউনিয়নের সেই দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ সময় বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সম্পৃক্ততায় আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অনিয়মে সম্পৃক্ততার অভিযোগ তোলেন।
বুধবার দুপুরে পৃথক স্থানে সাংবাদিকদের সামনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন হরনী ইউনিয়নে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মুসফিকুর রহমান মোরশেদ ও চানন্দি ইউনিয়নের ঢোল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম শামীম।
হাতিয়া বাজারে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মুসফিকুর রহমান মোরশেদ বলেন, তামাশার এই নির্বাচন বর্জন করলাম। নির্বাচন কমিশনার আমাদেরকে যেভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার কিছুই তার ছিঁটেফোঁটাও বাস্তবে দেখলাম না। প্রশাসনের সহযোগিতায় সবকটি গোপন কক্ষে নৌকা প্রার্থীর লোকজন জোর করে ইভিএম মেশিনের সুইচ টিপে ভোট নিচ্ছে। কোন কেন্দ্রেই ভোটারদেরকে চেয়ারম্যান পদে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। সকালে নদীর কুলে কয়েকজন এজেন্টকে আটক করে বেঁধে রাখা হয়। বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়। কোন কেন্দ্রে আমার এজেন্ট দিতে দেওয়া হয়নি।
চর লঙ্গলিয়া বেড়ির মাথা বাজারে নিজের কর্মী সমর্থখদের সাথে নিয়ে সংবাদিকেদের সামনে চানন্দি ইউনিয়নে ঢোল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম শামীম ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি বলেন, এর আগে হাতিয়ায় সবকটি ইউনয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলীর লোকজন তাদের প্রতিপক্ষ একজন চেয়ারম্যান মেম্বর প্রার্থীকেও ভোটের মাঠে থাকতে দেয়নি। আজ প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে ভোট ডাকাতির নজিরবিহীন ঘটন দেখলাম। আমার এজেন্টদেরকে কেন্দ্রে যেতে দেয়নি সন্ত্রাসীরা। পুলিশ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করে উল্টো আমাদের ওপর চড়াও হয়েছে। কোনো কেন্দ্রেই ভোটের পরিবেশ নেই। এটি ভোট নয়, ভোট ডাকাতির মহোৎসব চলছে।
হরনি ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আখতার হোসেন ও চানন্দি ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আজহার উদ্দিন এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, অনেক সুন্দর, সুস্থ পরিবেশে ভোট হচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী মোরশেদ ও শামীম অনেক আগ থেকে উদ্ভট অভিযোগ করে আসছেন বলেও মন্তব্য করেন তারা।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, আমাদের কাছে নির্বাচনে অনিয়মের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। নির্বাচনে কোথাও অপীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি। একটি কেন্দ্রে শুধু ইউপি সদস্য নিয়ে ঝামেলা হয়েছে সেখানে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ