নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্থাপিত গরু বাজারের হাসিলের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এক ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় আহত হয়েছেন আরও ৫ জন।
গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার নাম রিফাতুল ইসলাম রিফাত (২৩)। রিফাত সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য এবং সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়া বাড়ির মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ রিফাতকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার (১০ জুলাই) রাত ৯টার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী পৌরসভার মদিনা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, সোনাইমুড়ী পৌরসভার হাইস্কুল মাঠে ঈদুল আজহা উপলক্ষে একটি গরু বাজার সরকারিভাবে ইজারা দেওয়া হয়। ওই গরু বাজারের হাসিল আদায়ের টাকা দলীয় নেতাকর্মীদের সমন্বয় করে শিডিউল ক্রয়কারীদের মধ্যে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় নেতারা। এর মধ্যে সোনাইমুড়ী পৌরসভার বানুয়া গ্রামে সরকার দলীয় নেতাকর্মীকে হাসিলের ৪০ পার্সেন্ট, নাওতলা গ্রামের নেতাকর্মীকে ২০ পার্সেন্ট টাকা এবং পৌরসভার ৫-৬ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাকর্মীকে হাসিলের ৪০ পার্সেন্টের টাকা ভাগ করে দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে আমাকে হাসিল আদায়ের ২০ পার্সেন্ট টাকা ও রাসেলদের লোকজনকে ২০ পার্সেন্টের টাকা দেওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার স্থানীয় নেতারা হাসিল আদায়ের টাকা ভাগ করে রাসেলের কাছে দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে রাসেল টাকা অর্ধেকে ভাগ হবে না ঘোষণা দিলে বিরোধ দেখা দেয়।
জুয়েল অভিযোগ করে আরও বলেন, এ নিয়ে শুক্রবার রাতে আমার সাথে রাসেলের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। পরের দিন জানতে পারি যাদের নামে সিডিআর ফরম কেনা হয়েছে তাদেরকে ফরম প্রতি ৪০ হাজার টাকা করে দিয়ে দেওয়া হয়। যে সব শিডিউল বিক্রি হয়েছে তার ৫টি রাসেলদের লোকজন ক্রয় করে। শনিবার সন্ধ্যায় তারা আমাকে বাইপাস এলাকার একটি বাড়িতে ডেকে নেয়। একপর্যায়ে ওই স্থানে তারা আমার ২জন লোককে মারধর করে। এরপর রবিবার বিকেলের দিকে রাসেলও তার লোকজন শিপন নামে আমাদের আরেক অনুসারীকে মারধর করে। ওই সময় আমরা প্রতিরোধ করতে গেলে দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মারধরের ঘটনা ঘটে। এরপর রবিবার রাত ৯টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মী রিফাত তার দোকান থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে মদিনা ভবনের সামনে তাকে গতিরোধ করে রাসেল, জয়নালসহ তাদের ১০-১৫ জন তার ওপর হামলা চালায়। শেষে রাসেলের নির্দেশে জয়নাল নামে এক যুবক রিফাতের পায়ে গুলি চালায়।
সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শামল উদ্দিন জানান, অভিযুক্ত রাসেল বছর খানেক আগে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করে। কিছু দিন আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় বলেও জানান তিনি। গরু বাজারের হাসিলের টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে রিফাতকে গুলি করে রাসেল ও তার সহযোগী বহিরাগত সন্ত্রাসীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রিফাত নামে এক যুবকের পায়ের পাতায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গুলির আঘাতের চিহ্ন কিনা তা ডাক্তারি রিপোর্ট হাতে পেলে বলা যাবে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা