বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে তিন শতাধিক পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাবাসীর তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেছেন, প্রয়োজন হওয়া মাত্রই সীমান্তের শূন্যরেখার কাছাকাছি বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে সরকার।
তিনি বলেন, সীমান্তের অতি কাছের বাসিন্দাদের প্রথম দফায় অস্থায়ী ক্যাম্পে সরিয়ে নেয়া হবে। পরিস্থিতি বুঝে ক্রমান্বয়ে অন্যদেরকেও নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হবে। এখন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
সোমবার সীমান্ত পরিস্থিতি দেখতে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাধীন ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু পাড়া এবং আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। এসময় তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এলাকাবাসী এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে সীমান্ত পরিস্থিতি এবং আশুকরণীয় বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন।
পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে যে গোলাগুলি চলছে তা সেদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হলেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশিদের উপর। ইতিমধ্যে স্থল মাইন বিস্ফোরণে একজন আহত এবং মর্টার শেল নিক্ষেপে একজন নিহতসহ ৫ জন আহত হয়। সীমান্তের ওপার থেকে নিক্ষিপ্ত মর্টার শেল এপারে এসে পড়ায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এমন অবস্থায় প্রয়োজনে সীমান্ত লাগোয়া মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, গোলাগুলির কারণে সীমান্তের কাছাকাছি ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র আমরা কক্সবাজার জেলার উখিয়া কুতুপালং স্কুলে স্থানান্তর করেছি। বর্তমানে পরীক্ষার্থীদের সেখানে নেয়া আনার কাজে সহযোগিতা করছে স্থানীয় প্রশাসন। জেলা প্রশাসকের সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, জনগণ যেন আতঙ্কিত না হয় সেই পরিবেশ সৃষ্টিতে পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে। ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে, সোমবারও সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাবর্ষণের শব্দ পাওয়া গেছে। সীমান্তবাসী জানায়, ওপারে মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সাথে সেদেশের গেরিলা বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মি (এএ) এর সংঘর্ষ থামছে না। রবিবার রাতেও বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের আকাশে যুদ্ধবিমান ও ফাইটার হেলিকপ্টারকে উড়ে উড়ে গোলাবর্ষণ করতে দেখেছেন স্থানীয়রা।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক