কুড়িগ্রামে সারাদিনভর থাকে সূর্যালোক এবং জনজীবন স্বাভাবিক। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই হালকা কুয়াশায় ছেয়ে যেতে শুরু করে চারদিক। রাতভর ঠাণ্ডার পর ভোর রাতে হালকা কুয়াশা শুরু হয়। সাথে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা অনুভূত হয়।
সীমান্তবর্তী ও হিমালয় পাদদেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে শীতের আগমনের চিত্র এটি। দিনের তাপমাত্রা অনেকটা সহনীয় থাকলেও সন্ধ্যা হতেই তা হ্রাস পেয়ে বাসিন্দাদের উষ্ণ কাপড়পরিধানে বাধ্য করে আসছে। কেউ কেউ কাঁথা-কম্বল গায়ে দিয়ে রাত যাপন শুরু করেছেন। এতে শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য সমস্যা শুরু হয়েছে বেশি।
জেলার রাজারহাট উপজেলা কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, নভেম্বরের শুরুতে তাপমাত্রা অনেকটা কমে জেলার ওপর দিয়ে শীত অনুভূত হচ্ছে। তবে এ মুহূর্তে ঘন কুয়াশার সম্ভাবনা নেই। জেলায় গত কয়েকদিন ধরে ক্রমেই তাপমাত্রা হ্রাস পেতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সাথে বাড়বে কুয়াশার মাত্রা।
এদিকে, শীতের আগমনে ব্যস্ত সময় পার করছেন ধনুকররা। নিজেদের প্রয়োজনীয় পোশাক সংগ্রহে নিতে নিম্ন আয়ের মানুষজন ভ্রাম্যমান কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করতে শুরু করছেন। প্রতিদিন শীত নিবারণে মানুষজন লেপ তোষক ও গরম কাপড়ের বায়না দিয়ে তৈরি করতে শুরু করেছেন। সদর উপজেলার ধরলা নদী পাড়ের বৃদ্ধ দিন মজুর মহুবর মিয়া বলেন, ‘গরমের দিনই আমাদের জন্য ভালো। শীত আসলেই হামরা খুব ক্ষতিত পড়ি যাই। বিড়ম্বনার শিকার হওয়া নাগে। শীত বস্ত্রের অভাবে যেমন কষ্ট পাই তেমনি মাঠে কাজ করে রোজগার করাও কষ্টকর হয় ‘
রাজারহাট উপজেলার টগরাইহাট এলাকার বাসিন্দা ফজলুল হক বলেন, ‘এখনও তেমন ঠাণ্ডা না পড়লেও সন্ধ্যার পর থেকে শুরু করে রাতভর বেশ ঠাণ্ডা কদিন ধরে চলছে। ভোরবেলা থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত এ ঠাণ্ডা চলমান থাকে। এখনও কুয়াশা না পড়লেও ঠাণ্ডা অনেক বেড়েছে। ছোট বাচ্চা কাচ্চা ও বুড়োদের জন্য সমস্যা ‘
এ ব্যাপারে রাজারহাট আবহাওয়া কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মো:আব্দুস সবুর জানান, ‘নভেম্বর শুরু হওয়ার সাথে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে এবং তা পর্যায়ক্রমে আরো বাড়বে। তাপমাত্রা ১৯ থেকে ২৯ডিগ্রিতে ওঠানামা করছে।’ এদিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘শীত এ অঞ্চলের আগাম সমস্যা।আমরা তা মোকাবেলায় সরকারিভাবে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে কম্বল চেয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি।আশা করছি কোন সমস্যা হবে না।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল