জন্ম থেকেই দুই পা উল্টো সরু-বাঁকা। তারপরও স্বপ্ন জয়ে থেমে নেই অদম্য আজাহারুল। সকল কষ্ট উপেক্ষা করেই হামাগুড়ি দিয়ে এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন মানবিক বিভাগে। লক্ষ্য ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। আজাহারুলের বাড়ি নেত্রকোনার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বনতিয়শ্রী গ্রামে।
বালালী বাঘমারা শাহজাহান মহাবিদ্যালয় থেকে এবার এইচএসসি সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন আজাহারুল। দিনমজুর বাবা মনির উদ্দিনের ভিটেবাড়ি ছাড়া কিছুই নেই।
আজাহারুলের দুই হাতও বাঁকা। দুই হাতের ওপর ভর করে স্বপ্ন জয়ের পথে এগিয়ে চলেছেন। যে কারণে তার বাড়ি থেকে ১৩ কিলোমিটার দূর পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন। দুটি হাতের কুনই তার ভরসা। প্রতিদিন তিন কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে কোনোমতে হামাগুড়ি দিয়ে কলেজে আসতেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুই বছর ধরে দুই হাতে ভর করে হামাগুড়ি দিয়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে বালালী বাঘমারা শাহজাহান কলেজে নিয়মিত যাওয়া আসা করতো আজহারুল। যদি অটো কিংবা রিকশা দিয়ে আসতে হয় তাহলে প্রতিদিন খরচ হয় ৬০/৭০ টাকা। কিন্তু দিনমজুর বাবার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়না সব সময়। তবু তার পড়ালেখা থেমে থাকেনি।
প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ২ দশমিক ৮৩ পেয়ে কৃতকার্য হয়ে জেএসসিতে পায় ২ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট। এরপর এসএসসি তে ২.৮৯ পেয়ে তিনি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে কেন্দ্র সচিব কলেজ অধ্যক্ষ মো. শফিকুর রহমান জানান, হামাগুড়ি দিয়ে আজহারুল আমাদের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে এসেছে। অতিরিক্ত সময়ের জন্য সে একটি আবেদন করেছে। আমি আবেদনটি মঞ্জুর করেছি এবং তাকে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করেছি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল