ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বুয়েটে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত সাবেকুন নাহার সনি'র বাবা হাবিবুর রহমান ভূইয়া। শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন। হাবিবুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের বিজেশ্বর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ভূইয়ার ছেলে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
নিহত সনির ফুফাতো ভাই হাবিবুর রহমান ভূইয়ার ভাগ্নে জাহিদুল ইসলাম ইমন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামা গত তিন মাস যাবৎ ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। গত একমাস যাবৎ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছিলেন উনাকে ৬টি কেমোথেরাপি দিতে। একটি থেরাপি দেওয়া হয়েছিল। এরই মাঝে উনার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। সকালে তিনি ঘুমের মাঝে ইন্তেকাল করেছেন। উনার মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে বাদ এশা স্থানীয় বাজার বড় মসজিদে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
জাহিদুল ইসলাম ইমন আরও জানান, মামা মেয়েকে হারানোর পর ‘সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গনের’ দাবি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন। সনি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ৮ জুন ‘সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন’ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সেই কর্মসূচিতে তিনি প্রতি বছর উপস্থিত হয়ে তার মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করে আসছিলেন। মামা মারা গেছেন কিন্তু আফসোস, দীর্ঘ ২১ বছরেও উনি তার সন্তান সনি হত্যার বিচার কার্যকর হতে দেখে যেতে পারেননি।২০০২ সালের ৮ জুন টেন্ডারবাজিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বুয়েট ছাত্রদল সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান মুকিত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের টগর গ্রুপ। দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে বুয়েটের আহসান উল্লাহ হলের সামনে সাবেকুন নাহার সনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। সাবেকুন নাহার সনি ছিলেন কেমিকৌশল বিভাগের (৯৯ ব্যাচ) লেভেল ২, টার্ম ২-এর মেধাবী ছাত্রী। তার মৃত্যুতে সেদিন জ্বলে উঠেছিল গোটা দেশ। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। নিম্ন আদালতে মুকিত, টগর ও সাগরের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়।
২০০৬ সালের ১০ মার্চ হাইকোর্ট মুকিত, টগর ও সাগরের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এসএম মাসুম বিল্লাহ ও মাসুমকে খালাস দেন হাইকোর্ট। পরবর্তীতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত মোকাম্মেল হায়াত খান মুকিত পালিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ায়। পলাতক রয়েছেন নুরুল ইসলাম সাগর ওরফে শুটার নুরু। জেলে রয়েছেন টগর।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত