নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌরাস্তায় প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি খাস জমি উদ্ধার করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় উদ্ধারকৃত জায়গার চারদিকে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেয় প্রশাসন। অবৈধ দখলদাররা সরকারের খাস জমিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করে এবং বালু উত্তোলনের মাধ্যমে দখল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
শনিবার বিকেলে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তার উত্তর পাশে মাইজদী-ঢাকা মহাসড়ক সংলগ্ন আলীপুর মৌজার ৮১ শতাংশ খাস জমি অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করেন জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শুভ দেবনাথ।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ৮১ শতাংশ জায়গায় চৌমুহনী পৌরসভা ময়লা ফেলে আসছিল। কয়েক দিন যাবৎ এ জায়গা বালু ফেলে খুব দ্রুতগতিতে ভরাট করা হচ্ছিল। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শুভ দেবনাথ। অভিযানকালে উক্ত স্থানে প্রায় ১৬০০ ঘনফুট বালু জব্দ করে পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ফিরোজ রশীদের জিম্মায় প্রদান করা হয়। এসময় বালু ভরাটের সাথে সম্পৃক্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকৃত জায়গার চারদিকে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেয়া হয়।জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শুভ দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যালয় স্থাপনের নাম করে ৫০ শতক জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও বালু ফেলে দ্রুত পুরো জায়গাটি দখল করা হচ্ছিল। আমরা পুরো জায়গা দখলমুক্ত করে লাল নিশান টাঙিয়ে দিয়েছি। সরকারি সাইনবোর্ড লাগানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে রবিবার বিকেলে জানতে চাইলে বেগমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. একেএম জাফর উল্যাহ বলেন, আওয়ামী লীগের অফিসের জন্য নয়। বরং আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে এমপি কিরণের লোকজন সরকারি খাস জায়গা দখল করার চেষ্টা করছে। এটা কিরণ সাহেব করিয়েছেন বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, কিসের পার্টি অফিস, দখল! এভাবে অনেক জায়গা বেদখল হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জায়গা দখল করে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণের বিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে তার কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াছিন আরাফাত বলেন, অভিযুক্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। এজন্য জরিমানা করা সম্ভব হয়নি। এটা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শুভ দেবনাথ করেছেন।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, বালু জব্দ করে রাখা হয়েছে। তবে কাউকে পাওয়া যায়নি। ওই স্থানে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই