লক্ষ্মীপুর সদরে কয়েক সেকেন্ডের টর্নেডোর আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় ১০টি বসত ঘরবাড়ি। উপড়ে পড়ে শতশত গাছপালা ও গাছের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় একটি গবাদিপশু গরুর, আহত হয় আরও দুইটি গরু।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের পিয়ারাপুর গ্রামের শামসুদ্দিন পাটোয়ারী বাড়ীতে গেলে চোখে পড়ে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ও উপড়ে পড়া গাছ-পালার দৃশ্য।
এর-আগে সোমবার রাত ১০টা ১২মিনিটে হঠাৎ ও-ই বাড়ীর ওপর দিয়ে বয়ে যায় (ঘূর্ণিঝড়) টর্নেডো প্রবল বাতাস। কয়েক সেকেন্ডে লন্ডভন্ড হয়ে যায় পুরো বাড়ীর দৃশ্য। মুহুর্তে হৈচৈ ও কান্নার রোল পড়ে বাড়ি জুড়ে।এ বাড়ীর বাসিন্দা লোকমান হোসেনের ১টি গবাদিপশু গরুর মৃত্যু হয়। আহত হয় আরও দুইটি। বিধ্বস্ত হয় ৩টি ঘর।
মো: নাসির উদ্দিনের বসতঘর, মাকছুদুর রহমানের বসতঘর টিনের ছাল নিয়ে যায়, তার সন্ধান মিলেনি। হোসেনের বসতঘর, নুরুল আমিন বসতঘর, বাবলু বসতঘর, রুবেল বসতঘর, মো. শাহজাহান, আনসার উদ্দিনের বসতঘর।
ক্ষতিগ্রস্ত মো. লোকমান হোসেন জানান, এমন বাতাস এর-আগে কখনও দেখিনি। ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের বাতাসে আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। ৩টি ঘর বিধ্বস্ত হয়। ১টি গরু মারা যায়। দুইটি আহত হয়। নষ্ট হয় অসংখ্য গাছপালা।
পপি নামে এক শিক্ষার্থী জানান, মনে করলাম ঘূর্ণিঝড় 'মোখা'র আঘাতে আমাদের ক্ষতি হবে,কিন্তু আমাদের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি। আর সামান্য বাতাসে আমাদের সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছে। চোখের সামনে গাছের নিচে চাপা পড়ে আমাদের একটি গরুর মৃত্যু হয়।
বাবুল ও তার স্ত্রী রেখা বেগম জানান, দুঃখকষ্ট করে কোনরকম বেঁচে আছি সন্তানদের নিয়ে এ ঘরে। ঘরটিও রাতে ভেঙে শেষ হয়ে গেছে। এখন কোথায় থাকবো, সন্তানদের নিয়ে। আমরা খুব অসহায় মানুষ। টানাপোড়েন সংসার। একমুঠো খাবার জোগাতে, অনেক কষ্ট হয়। এরমধ্যে তুফান আমাদের চরমভাবে আঘাত দিয়ে গেছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা ত্রাণ ও দূর্যোগ কর্মকর্তা মো: ইউনুস মিয়া। তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তালিকা করে ক্ষতিগ্রস্তদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ জানান, খুব দুঃখজনক। ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' থেকে সৃষ্টিকর্তা আমাদের রক্ষা করছে। যখন শুনলাম পিয়ারাপুরে কয়েকটি পরিবার টর্নেডোর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তখন অনেক খারাপ লেগেছে। আমরা ওইসব পরিবারকে আর্থিক সহয়তা করবো।
বিডি প্রতিদিন/এএম