২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর ঠাকুরপাড়ার মৃত খগেন রায়ের ছেলে টিটু রায় ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননা করে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ঠাকুরপাড়ায় তাণ্ডব চালায় একদল লোক। ওই ঘটনার পরে ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননা করে স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে টিটু রায় নামে একজনের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলা করা হয়। ওই মামলায় টিটু রায়কে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে রংপুরে সাইবার ট্রাব্যুনাল আদালতের বিচারক।
মঙ্গলবার দুপুরে সাইবার ট্রাব্যুনাল আদালতের বিচারক ড. আব্দুল মজিদ এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
জানাগেছে, ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর ঠাকুরপাড়ার মৃত খগেন রায়ের ছেলে টিটু রায় ফেসবুকে ধর্মীয় অবমানা করে একটি স্ট্যাটাস দেন। এ ঘটনার জের ধরে ১০ নভেম্বর জুমা নামাজের পর টিটু রায়ের ফাঁসির দাবিতে শলেয়াশাহ বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে স্থানীয়রা। পরে কয়েক হাজার মানুষ ঠাকুরবাড়ি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট করে তাণ্ডব চালায়। এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হন। বিষয়টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনায় আসে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে। ওই ঘটনায় ফেসবুকে ধর্মীয় আবমানার করার অভিযোগ এনে গত ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর ঠাকুরপাড়ার টিটু রায়ের বিরুদ্ধে রংপুর সদর উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের শলেয়াশাহ গ্রামের মুদি দোকানি রাজু মিয়া গঙ্গাচড়া থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। সেই সাথে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।আসামি পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত রায় বলেন, ফরেনসিক রিপোর্টে টিটু রায়ের ধর্মীয় অবমাননা করে স্ট্যাটাস দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।
সরকার পক্ষের আইনজীবী রুহুল আমিন বলেন, ঠাকুরপাড়া তাণ্ডবের ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ধর্মীয় অবমাননা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার একটি মামলার রায়ে টিটু রায়কে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মামলায় ১৭ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয় এবং যুক্তি-তর্ক শেষে বিচারক এই রায় ঘোষণা করেছেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন