না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন কিশোর বয়সে মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার (৬৯)। (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় শহরের বাগানবাড়ি এলাকায় তার শ্বশুরবাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি এক ছেলে ও স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগাহী রেখে গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগসহ নানা রোগে ভুগছিলেন।
তিনি সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের আয়নাডোবা গ্রামে ১৯৫৪ সালে ছাফিউর রহমান সরকার ও আনোয়ারা বেগমের সংসারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৭ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি এবং জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। তিনি রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিটের চেয়ারম্যান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। সর্বশেষ জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেন। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সংসদ সদস্য র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান লায়ন ফিরোজুর রহমান ওলিও, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাসিমা মুকাই আলী, সিভিল সার্জন মোঃ একরামউল্লাহ, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবিরসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারাসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ তাকে এক নজর দেখতে ছুটে যান।সোমবার বাদ আছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের প্রধান ঈদগাহ মাঠে নামাজে জানাজা ও রাষ্ট্রীয় মার্যদা প্রদান শেষে শহরের শেরপুর কবরস্থানে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়। জানাজায় অংশ নেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, বিমান প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অবঃ) এ.বি. তাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এর সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব এডঃ রেজাউল ইসলাম ভুইয়া, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি।
এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। নামাজে জানাজায় ইমামতি করেন জেলার প্রধান জামে মসজিদের খতিব মাওলানা সিবগাহতুল্লাহ নূর। এর আগে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম ও পুলিশ সুপার মো: শাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি চৌকষ দল মহান মুক্তিযুদ্ধে অনবদ্য ভূমিকা রাখা এই ব্যক্তিত্বকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সালাম প্রদান করেন। জানাজা শেষে বর্ষীয়ান এই নেতাকে চির বিদায় জানাতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন