৭ সন্তানের জনক বৃদ্ধ আ: জলিল। জীবন সংসারকে আকড়ে ধরে রাখতে বৃদ্ধ বয়সেও এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। সময়ের পালাবদলে সন্তানরা হয়েছেন সাংসারিক। সামান্য আয়ের টানপোড়েনে নিদারুণ অসহায়ত্বের মাঝে দিন কাটছে তার।
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ধারা ইউনিয়নের নিজধারা গ্রামের বাসিন্দা মো. আ: জলিল। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে তার বর্তমান বয়স ৪৫ বছর। তার ভাষ্যমতে প্রকৃত বয়স ৭০ বছর। বয়সের এমন অসংগতি ধরা পড়েছে জাতীয় পরিচয়পত্রে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্রে আ. জলিলের বয়স দেখানো হয়েছে ১৯৭৭ সালের এপ্রিল মাসের ২ তারিখ। তার মেয়ে মলোদা খাতুনের বয়স দেখানো হয়েছে ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি ২ তারিখ। মেয়ের বয়সের চেয়ে বাবা প্রায় ৫ বছরের ছোট। এখানেই শেষ নয় জাতীয় পরিচপত্রে আ. জলিলের আপন ছোট বোনের বয়স দেখানো হয়েছে ১৯৫৪ সালে, ছোট ভাই আ. হালিমের বয়স ১৯৩৫ সালে ও স্ত্রী তহুরা খাতুনের বয়স ১৯৫৫ সালে।প্রতিবেদন সংগ্রহকালে এমন তথ্য উঠে আসে ভূক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে। বয়সের হেরফেরে বিপাকে পড়েছেন আব্দুল জলিল। সংশোধন করতে গিয়ে পড়েছেন বিড়ম্বনায়। নানা কাগজপত্র জমা দেয়ার বেড়াজালে বয়সটাই সংশোধন হয়নি। করতে পারছেন না সামাজিক নিরাপত্তার বেষ্টনীর আওতায় কোনো ভাতার কার্ড।
ভুক্তভোগী আ. জলিল আলী আক্ষেপ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমার ভোটার আইডিতে জন্ম তারিখ অনুযায়ী প্রায় ৩০ বছর কম হয়ে গেছে। এছাড়া আমার প্রকৃত বয়স ৭০ বছর হলেও আইডি কার্ড অনুযায়ী বর্তমান বয়স মাত্র ৪৫ বছর। বয়স কম হওয়ার কারণে খুব সমস্যায় পড়েছি। এ আইডি কার্ড দিয়ে কোনো কাজ করতে পারছি না। বয়স্ক ভাতার কার্ডসহ সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি না। আইডি কার্ডে ভুলের কারণে পদে পদে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সংশোধনের জন্য বিভিন্ন দপ্তরের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় ইউপি সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, হত দরিদ্র আব্দুল জলিলের জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়সের ভুল বিষয়টিতে আমি অবগত। বয়স জটিলতায় তার বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সংশোধনের বিষয়টি সময় সাপেক্ষ হওয়ায় কিছু করা যাচ্ছে না। তবে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে অতি শিগগরিই উপকারভোগীর আওতায় আনা হবে।
সংশোধন করণীয় সর্ম্পকে জানতে হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রাজিবুল করিম জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। যেহেতু এখন পর্যন্ত আবেদন করেননি। সংশোধনের আবেদন করলে অবশ্যই সংশোধন করে দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা হাসান বলেন, জন্ম নিবন্ধনে জন্ম সাল সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে ওনার আবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল