বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদে থাকা শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের একের পর এক পদত্যাগে অচলাবস্থা দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। এরই মধ্যে প্রশাসনিক ৫১টি পদের মধ্যে শিক্ষকদের মধ্যে ৪৯ জন পদত্যাগ করেছেন। প্রক্টরিয়াল ও ছাত্র পরামর্শক বডি পদত্যাগ করায় শৃঙ্খলা রক্ষাসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কার্যক্রমও অচল হয়ে পড়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও প্রশাসনিক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ উপাচার্য ছাড়া নেওয়া সম্ভব নয়। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবেও রাষ্ট্রপতি কাউকে নিয়োগ না দেওয়ায় জটিলতা আরও বেড়েছে। উপাচার্য না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট সভাসহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোও নেওয়া সম্ভব হবে না। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস শুরুর বিষয়েও যেন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে হাবিপ্রবি উপাচার্য (ভিসি) পদত্যাগ করেন অধ্যাপক ড.এম কামরুজ্জামান। শুরু হয় পদত্যাগের হিড়িক। একে একে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক, ছেলেদের আবাসিক হলের সব হল সুপার পদত্যাগ করেন। তবে মাঝে কিছুদিন রেজিস্ট্রার কাজ চালিয়ে নিলেও শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করাসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়াতে জটিলতা সৃষ্টি হতে থাকে।
জানা যায়, শুক্রবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও প্রক্টরিয়াল টিম, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা শাখার পরিচালক, আইকিউএসি, আইআরটি, পরিবহন শাখা, প্লানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট, পিআরপি পরিচালক, এক্সাম কন্ট্রোলার এবং পোস্ট গ্রাজুয়েট অনুষদের ডিন পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন হলের হল সুপারসহ দপ্তর প্রধানরাও পদত্যাগ করেছেন।
গত ১৭ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওইদিন বেলা ৩টার মধ্যে আবাসিক হলসমূহ ফাঁকা করার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর গত ১২ আগস্ট থেকে হল খুলে দেয়ার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ১৪ আগস্ট থেকে হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হল খুলে দেয়ার পর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি হলে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ উদ্দেশ্যে সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের সমন্বয়ে হলভিত্তিক টিম গঠন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, চলমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রশাসন প্রায় শূন্য হয়ে পড়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, একাডেমিক কার্যক্রম থেকে শুরু করে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে। সেশনজটের কবলের আশংকা দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাও কঠিন হয়ে গেছে। আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এএ