চাঁদপুরে ৩ দিনের টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে শহরের বিভিন্ন সড়ক। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত রবিবার রাত থেকে মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে মুশলধারে বৃষ্টির ফলে ড্রেনের পানি মিলেমিশে শহরের রাস্তা একাকার হয়ে গেছে।
শহর ঘুরে দেখা যায়, টানা বৃষ্টিতে শহরের আ. করিম পাটোয়ারী সড়ক ও ট্রাক রোডের অবস্থা একেবারই নাজুক। সেখানে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। উভয় সড়কে বড়-বড় গর্তের ফলে ট্রাক, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, রিকশাসহ ছোটবড় অসংখ্য যানবাহন হেলেদুলে চলছে।
আ. করিম পাটোয়ারী সড়কের বাসিন্দা মুনতাসিম মাসুক বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ এই সড়কের ফুটপাত ও সড়ক সংস্কার কাজ ধনী গতিতে চলছে। কবে নাগাদ পৌরসভার এই কাজ শেষ হবে জানি না। দীর্ঘ ৫/৬ বছরে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি নূন্যতম সংস্কার না করায় চরম ক্ষোভ স্হানীয়দের মাঝে। এই সড়কের বেহাল দশায় কোন অটোরিকশা - সিএনজি যাত্রীদের কেউ ভাড়া নিতে চায় না।
নাজিরপাড়ার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর গাজী বলেন, এই এলাকাটি স্বাধীনতা পরবর্তী জলাবদ্ধতার অভিশপ্ততা থেকে পরিত্রান পায়নি। ড্রেনেজ ও সড়কের কাজ করলেও বছর না যেতেই পিচ ঢালাই উঠে বড় বড় গর্ত এবং পয়ঃনিস্কাশন প্রক্রিয়া সংস্কার না করায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। একই রকম অবস্থা পাশের মাদ্রাসা রোড, ব্যাংক কলোনী ও প্রফেসরপাড়া।
অপরদিকে, পুরান বাজার এলাকার পালপাড়া মোড় থেকে দোকানঘর পর্যন্ত সড়কটিও যেন মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে সড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী থাকলেও অজ্ঞাত কারণেই মেরামত করছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
বিগত ঈদের পূর্বে পৌর কর্তৃপক্ষ সড়কটিতে কিছু সুরকি ফেলে যান চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করে। মেরামতের কিছুদিন পর বিগত বৃষ্টিতে তা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সড়কটির চিত্র আবার একই। বর্তমানে সড়কটি স্থানে স্থানে গর্ত হয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করলেও আর মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে জেলার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চলাচলে জীবনের ঝুঁকিকে আরো প্রকোট করেছে। বর্তমানে সড়কটিতে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শত শত যাত্রী যানবাহনে চলাচল করলেও কারোই কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।
অটোরিকশা চালক সবুজ গাজী বলেন, এই সড়কে এখন আর গাড়ী চালানো যায় না। রাস্তা খারাপ হওয়ায় সিএনজিতে মালামাল লাগিয়ে কুল কিনারা পাই না। আইজ এইডা, কাইল ঔডা নষ্ট হয়ে যায়। সংসার চালামু নাকি গাড়ির যন্ত্রপাতি লাগামু।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মো: শোয়েব জানান, আজ বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৮০ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বালাদেশ এলাকায় ঝড় হাওয়ার সম্ভাবনা নেই। দিনে ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও, আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ বৃষ্টিপাত হ্রাস পেতে পারে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ