সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খালাতো ভাই ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি, ছিনতাই, মারধর, বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় তরু লোদীর ছেলে সীমান্ত লোদীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের আরও ৪০ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং ১০/১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
শাহজাদপুর পৌরসভার গত নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত পরাজিত মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান সজল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বাদী পক্ষের আইনজীবি এ্যাড: আব্দুল আজিজ আনছার জানান, গত রবিবার আদালতে অভিযোগটি দাখিল করা হয়েছিল। মঙ্গলবার শুনানী শেষে শাহজাদপুর আমলী আদালতের বিচারক গোলাম রব্বানী থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, শাহজাদপুর পৌরসভার ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনের শুরুতেই আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মনির আক্তার খান তরু লোদী তাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য চাপ দিতে থাকেন এবং তার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাকে মারধর ও ক্ষতি করার অপেক্ষায় ছিলেন তরু লোদী। এ অবস্থায় ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর রুপপুর নতুনপাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারনা চলাকালে বাদী ও তার কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা করা হয়। হামলার সময় কয়েকটি মোটরসাইকেল, মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মনিরামপুরের নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে বাদীকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য আবারও চাপ দেওয়া হয়। তাতে রাজী না হওয়ায় বাদীর বসতঘরের আলমিরা থেকে নগদ ২০ লাখ টাকা ও বেশকিছু স্বর্ণালংকার লুট এবং বসতঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। এছাড়াও ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন মনির আক্তার খান তরু লোদী প্রভাব খাটিয়ে বাদীকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয়নি। এছাড়াও তিনি নিজেকে তৎকালীণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খালাতো ভাই পরিচয় দিয়ে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার ও জাল ভোট প্রদানের মাধ্যমে অবৈধভাবে নির্বাচনে বিজয়ী হন। এরপর বাদীর কর্মী-সমর্থকদের বেশকিছু বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আসামিদের প্রভাবের কারণে বাদী ও সাক্ষীরা এলাকা ছেড়ে পলাতক থাকায় এতোদিন মামলা দায়ের করতে পারেননি বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান সজল দুপুরে জানান, মামলার প্রধান আসামি সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আপন খালাতো ভাই। এতোদিন তার বিরুদ্ধে মামলা করার মত কোনও পরিবেশ ছিল না। যে কারণে দেরিতে মামলা করতে হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শাহজাদপুর পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদী বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগে হয়রাণী করার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ