নাব্যতা সংকটের কারণে পাবনার কাজীরহাট থেকে আরিচা নৌপথে তিন দিনের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় দুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। উভয় প্রান্তে পারাপারের অপেক্ষায় আটকা রয়েছে সহস্রাধিক পণ্যবাহী ট্রাক।
গত শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১১টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দেন বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। এর আগেও, গত ২ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে নাব্যতা সংকটের অজুহাতে কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সাড়ে ৩৮ ঘণ্টা পর পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে বিআইডাব্লিউটিসি এর এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ড্রেজিংয়ের নামে অধিক বরাদ্দের জন্য শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই এই নাব্যতা সংকটের কথা বলে ফেরী চলাচল বন্ধ রাখেন।
আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের ফেরি সার্ভিস ঠিক রাখতে দীর্ঘ ৩ মাস ধরে আরিচা ঘাটের অদূরে ৬টি ড্রেজার দিয়ে পলি অপসারনের কাজ করছে। কিন্তুু এতেও নাব্যতা সংকটের কোন উন্নতি হয়নি। দিন দিন নাব্যতা সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করায় অবশেষে বন্ধ করা হয় এ নৌরুটের ফেরি সার্ভিস। এতে একদিকে ড্রেজিংয়ের নামে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও কোন কাজে আসছে না। অপরদিকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এ নৌরুটে ফেরিতে যাতায়াতকারী যাত্রী ও ট্রাক শ্রমিকদেরকে।
ট্রাক চালক আজমল হোসেন বলেন, কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে মাঝে মধ্যেই ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে আমাদের ভোগান্তি বাড়ে। ঘুরে যেতেও পাড়ি না আবার দুতিনদিন দেরি করাও সময়ের ব্যাপার ও ব্যাপক কষ্টকর।
বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা আঞ্চলিক অফিসের একাধিক কর্মকর্তা না প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটের ফেরি সার্ভিস সচল রাখতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকাতেও কেন এমন হচ্ছে তা আমাদেও বোধগম্য নয়। বর্ষা মৌসুমেও আমরা নদীতে ড্রেজিং করতে দেখেছি আবার এখন মৌসুমের শুরুতেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখারও দাবি জানান তারা। যেখানে স্বাভাবিকভাবে ফেরি চলাচলের জন্য ৯/১০ ফুট পানির গভীরতার প্রয়োজন বলেও জানান তারা।
কাজীরহাট ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির সহকারী ব্যবস্থাপক ফখরুজ্জামান জানান, শুক্রবার রাত থেকে নাব্যতা সংকটের কারণে নদীর বিভিন্ন অংশে পানি কমে গেছে। রাত ১১টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। শনিবার আমাদের ম্যানেজমেন্ট তিন দিনের জন্য কাজিরহাট-আরিচা নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। আশাকরি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে। জরুরী পণ্যবাহী ট্রাক চালকদের অন্য পথে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।
তবে বিআইডব্লিউটিসির কাজিরহাট ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল হোসেন বলেন, আমাদের ফেরিগুলো সার্ভিসিং করা শেষ হয়েছে। রবিবার বিকেলে নদীর পানি পরিমাপ শেষে ফেরি চলাচলের বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল