ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পূর্ব বিরোধের জেরে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে নারীসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। এসময় উভয়পক্ষের দাঙ্গাবাজরা ১৫টি বাড়িঘর ব্যাপক ভাংচুর চালায়।
মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের চান্দের বাড়ি ও ছলিম বাড়ির গোষ্ঠীর লোকজনকের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের চান্দের বাড়ি গোষ্ঠী ও ছলিম বাড়ির গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অধিপাত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। চান্দের বাড়ির গোষ্ঠীর নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ বাহার, সাবেক ইউপি সদস্য তকদির হোসেন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোবারক হোসেন। ছলিম বাড়ির গোষ্ঠীর নেতৃত্বে রয়েছেন কামাল হোসেন।
কামাল বিএনপির নেতা। গত সোমবার রাতে ছলিম বাড়ির গোষ্ঠীর শহিদ মিয়ার ছেলে কয়েকজনকে নিয়ে চান্দের গোষ্ঠির এক বাড়িতে মাদক সেবন করছিল। এতে চান্দের বাড়ির লোকজন বাধা দেয়। এনিয়ে দুই গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ছলিম গোষ্ঠীর ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জেলা শহরের কালাইশ্রীপাড়ায় নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাত নয়টার দিকে সদর উপজেলার নাটাই গ্রামে যান। গাড়ি থেকে নামার পর প্রতিপক্ষে চান্দের গোষ্ঠীর লোকজন হামলা চালিয়ে আনোয়ারকে বেধড়ক মারধর করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন আনোয়ারকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। এদিকে সোমবার রাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকালে চান্দের বাড়ি ও ছলিম বাড়ির লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে উভপক্ষের ১৫টি বাড়িঘর ব্যাপক ভাংচুর চালায় দাঙ্গাবাজরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারীসহ ২০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে রয়েছেন আনোয়ার হোসেন (৩০), তাজি ইসলাম (৫৫), খায়ের মিয়া (৫০), আলী হোসেন (৪৫), রাতুল (১৮), অহিদ মিয়া (৫০), শিরিনা আক্তার (৩০), মমতাজ বেগম (৪০)। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, দীর্ঘদিনের গোষ্ঠীগত বিরোধ ও দ্বন্দ্বের জের ধরে চান্দের বাড়ির গোষ্ঠী ও ছলিম বাড়ির গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল