ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি) সম্প্রতি অষ্টমবারের মতো আয়োজন করেছে ‘৮ম আইসিএসবি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড ২০২০’। কর্পোরেট গভর্নেন্স এক্সিলেন্স-এর সম্মাননা প্রদানের উদ্দেশ্যে রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন-এর গ্র্যান্ড বলরুমে রবিবার অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
ইনস্টিটিউট কর্তৃক নির্ধারিত মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে ৪০টি কোম্পানিকে তাদের স্বচ্ছ কর্পোরেট গভার্নেন্সের জন্য এই অনুষ্ঠানে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ২০২০ সালে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে তারা কতটা কর্পোরেট ন্যায়পরায়ণতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বজায় রেখেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রধানত মূল্যায়ন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-এর (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের সভাপতি আইসিএসবি’র প্রেসিডেন্ট মোজাফফর আহমেদ ও কর্পোরেট গভর্নেন্স কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ইতরাত হুসেইন। ডিএসই এবং সিএসই’র অধিভুক্ত কোম্পানিগুলোকে মোট ১৩টি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী বিজয়ী কোম্পানিগুলোকে ট্রফি এবং সার্টিফিকেট প্রদান করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কর্পোরেট গভর্নেন্স চর্চার জন্য তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে পুরস্কৃত করতে আইসিএসবি’র এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। বর্তমান বাণিজ্যিক বিশ্বে দক্ষ কর্পোরেট গভার্নেন্সের গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে সুষ্ঠু কর্পোরেট গভর্নেন্স কালচার নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন’র (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য কর্পোরেট গভর্নেন্স একটি প্রধান নির্ধারক। বিএসইসি ক্রমাগত দেশের কর্পোরেট গভার্নেন্সের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে এবং এক্ষেত্রে চার্টার্ড সেক্রেটারিরা গভর্নেন্সের শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি আইসিএসবি’র প্রেসিডেন্ট মোজাফফর আহমেদ বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু কর্পোরেট গভর্নেন্স চর্চা অত্যন্ত আবশ্যক। এজন্যে কোম্পানিতে কর্মরত সকল ব্যক্তিদের প্রয়োজন টেকসই উন্নয়ন ও সর্বাধিক মূল্যবোধের চর্চা করা। কর্মক্ষেত্রে সুশাসন চর্চা যেমন কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি করে ঠিক তেমনি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ উৎপাদনশীলতা উন্নত করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি ব্যবসার দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যগুলোও নিশ্চিত করতে সুষ্ঠু গভর্নেন্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কর্পোরেট গভর্নেন্স কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ইতরাত হুসেইন বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান এবং পেশাদার দক্ষতা বিকাশের জন্য আইসিএসবি-এর ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে সুশাসন চর্চা ব্যবসায়ের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য পূরণের সাথে সাথে কর্মীদের মনোবল এবং উৎপাদনশীলতা উন্নত করতে সহায়তা করে। কর্পোরেট গভর্নেন্স কোড প্রবর্তন নিঃসন্দেহে বিএসইসি’র নেওয়া একটি দৃঢ় পদক্ষেপ।
অনুষ্ঠানে আইসিএসবি কর্তৃক প্রণীত ৫ম ও ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়াল স্ট্যান্ডার্ড (বিএসএস-৫ ও বিএসএস-৬)) উন্মোচন করা হয়। আইসিএসবি’র সাবেক প্রেসিডেন্ট ও কাউন্সিল মেম্বার মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, এফসিএস, মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে বক্তব্য প্রদান করেন। এই দুটি বিএসএস-এ ভার্চুয়াল ও হাইব্রিড মিটিং এবং সার্কুলেশনের মাধ্যমে রেজুলেশন বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা রয়েছে।
অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মেও সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তি, পেশাজীবী, বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় কর্পোরেট হাউসের কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ, ইনস্টিটিউটের সদস্য, মিডিয়া ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই