এনবিআরকে দুই ভাগ করা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার বিকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক হবে বলে সংবাদমাধ্যমে তথ্য দিয়েছে এনবিআরের জনসংযোগ বিভাগ।
আন্দোলনকারীদের টানা কলম বিরতি কর্মসূচির মধ্যে আলোচনায় বসার খবরটি এলো।
তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, আলোচনার বিষয়ে ‘আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব’ তারা পাননি। এ কারণে সোমবারও তারা কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করবেন।
এ নিয়ে তিন দফা কর্মসূচির সময় বাড়াল ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।
প্রথম দফায় বুধবার, বৃহস্পতি ও শনিবার কলম বিরতি পালন করে তারা। একই কর্মসূচি ছিল পরের দিনও। এবার তা আরও একদিন বাড়ানোর ঘোষণা এল।
রবিবার বিকালে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলে, “আমরা সংবাদমাধ্যমে জেনেছি যে, অর্থ উপদেষ্টা এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় আলোচনায় বসবেন।
“কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আমরা এখনও পাইনি। এ অবস্থায় আমাদের কর্মসূচি আগামীকাল (সোমবার) একইভাবে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলবে।”
‘একইভাবে’ বলতে আগের মত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, রপ্তানি কার্যক্রম এবং জাতীয় বাজেট প্রণয়ন কার্যক্রম এর আওতামুক্ত থাকবে।
দেশের সব কর অঞ্চল, ভ্যাট কমিশনারেট ও শুল্ক স্টেশনসহ এনবিআরের সব দপ্তরে কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে।
এর আগে এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল আমিন শেখ এক বার্তায় বলেন, “মঙ্গলবার সাড়ে ৩টায় অর্থ উপদেষ্টা অর্থ মন্ত্রণালয়ে এনবিআর সংস্কার বিষয়ে এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।”
এনবিআরকে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে আলাদা করতে গত ১৭ এপ্রিল খসড়া অধ্যাদেশে অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। তবে অধ্যাদেশের খসড়া অনলাইনে আসার পরেই তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তারা। কিন্তু তাদের মধ্যে সোমবার রাতে অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।
অধ্যাদেশের বিভিন্ন অনুচ্ছেদে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও নীতির বিষয়ে ‘অভিজ্ঞতাকে’ আমলে না নিয়ে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়নের সুযোগ রাখায় শুল্ক ও কর ক্যাডার এবং এনবিআরের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
অধ্যাদেশের অনুচ্ছেদ ৪(৪) এ বলা হয়েছে, রাজস্ব নীতি বিভাগের পদসমূহ আয়কর, কাস্টমস, ভ্যাট, অর্থনীতি, ব্যবসায় প্রশাসন, গবেষণা, পরিসংখ্যান, প্রশাসন, অডিট, আইন সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পূরণ করা হবে।
রাজস্ব নীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে “কর আইন প্রয়োগ ও কর আহরণ পরিস্থিতি মূল্যায়ন” যুক্ত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রাজস্ব আহরণে অভিজ্ঞ কোনো সরকারি কর্মকর্তা রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রশাসনিক পদসমূহে আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের সঙ্গে প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে।
বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা পদস্থ রয়েছেন, যা তাদের নির্ধারিত পদ।
অধ্যাদেশে নীতির সচিব হিসেবে 'উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে' নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, এনবিআর বিলুপ্তির ফলে এর বর্তমান সাংগঠনিক জনবল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে সংযুক্ত হবে। আর দুই বিভাগের সাংগঠনিক কাঠামো কেমন হবে, তার সরকার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানাবে।- বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত