বুধবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ওয়াদা পূরণের তাগিদ দিয়েছেন রসুল (সা.)

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

ওয়াদা পূরণের তাগিদ দিয়েছেন রসুল (সা.)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু হাসমা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুয়তলাভের আগে আমি তাঁর কাছ থেকে কোনো কিছু কিনেছিলাম। যার কিছু মূল্য পরিশোধ করা বাকি ছিল। আমি তাঁকে বললাম, সেই অর্থ আমি অমুক স্থানে নিয়ে আসব, কিন্তু আমি সে ওয়াদার কথা ভুলে গেলাম। তিন দিন পরে প্রতিশ্রুতির কথা আমার স্মরণ হওয়ায় আমি ওই স্থানে এসে দেখলাম, তিনি সেখানেই উপস্থিত আছেন। তখন তিনি শুধু এতটুকু বললেন, তুমি তো আমাকে খুবই কষ্টে ফেলেছিলে। আমি তিন দিন পর্যন্ত এখানে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি। আবু দাউদ। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু নন, সাহাবায়ে কিরামও ছিলেন ওয়াদা রক্ষার ব্যাপারে যতœবান। হজরত আবুবকর (রা.) খলিফা পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেওয়া ওয়াদা পূরণে উদ্যোগী হন। হজরত আবু জুহাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ১৩টি মোটাতাজা যুবক উট প্রদান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে কোনো একসময় আমরা সে উটগুলো আনতে গেলে আমরা তাঁর ইন্তেকালের সংবাদ শুনলাম; সুতরাং তখন আর আমাদের কিছুই দেওয়া হলো না। অতঃপর হজরত আবুবকর (রা.) খলিফা মনোনীত হয়ে খুতবা দেওয়ার সময় বললেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যার কোনো ওয়াদা রয়েছে, সে যেন আমার কাছে আসে। তখন আমি দাঁড়িয়ে তাকে আমার কথাটি জানালাম। অতঃপর তিনি আমাদের উট প্রদান করতে আদেশ করলেন। (তিরমিজি)। হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করলে এবং প্রথম খলিফা হজরত আবুবকর (রা.)-এর কাছে বাহরাইনের গভর্নর হজরত আলা ইবনে হাজরামির পক্ষ থেকে মালামাল এলে হজরত আবুবকর (রা.) বললেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কারও কোনো কিছু পাওনা থাকলে অথবা কারও সঙ্গে তাঁর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিশ্রুতি থাকলে তারা যেন আমার কাছে আসে। আমি তাঁর পক্ষ থেকে পরিশোধ করে দেব। হজরত জাবির (রা.) বলেন, আমি বললাম, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, আমাকে এতগুলো এতগুলো এতগুলো দান করবেন। অর্থাৎ তিনি তিনবার তাঁর হাত দুটি প্রসারিত করেছিলেন। হজরত জাবির (রা.) বলেন, অতঃপর হজরত আবুবকর (রা.) আমাকে এক কোষ দিলেন। আমি গুনে দেখলাম, ৫০০ দিরহাম। তখন তিনি বললেন, এ পরিমাণে আরও দুবার নাও। বুখারি ও মুসলিম। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াদা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তবে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করা সত্ত্বেও যদি ওয়াদা পালন করা না যায় তাহলে গুনাহ হবে না। হজরত জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি ইরশাদ করেছেন, যখন কোনো ব্যক্তি তার কোনো মুসলমান ভাইকে কোনো ব্যাপারে প্রতিশ্রিুতি দেয় এবং এরূপ নিয়ত রাখে যে, সে তা পূরণ করবে; কিন্তু পরে কোনো ঘটনাচক্রে সে তা পূরণ করতে পারেনি, এতে তার কোনো গুনাহ হবে না। আবু দাউদ, তিরমিজি।

► লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

 

সর্বশেষ খবর