গতকাল ছিল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শুভ বিজয়া দশমী। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালনে অসুর বধের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানো হয়। দেশবাসীর পক্ষ থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জানাই শুভ কামনা। তারা স্বস্তিতে-শান্তিতে সমৃদ্ধে পরিপূর্ণ হয়ে আনন্দে বাস করুক সৃষ্টিকর্তা যেন তাদের সেই শক্তি দান করেন।
দেশের প্রবীণ আইনবিদ সাধারণ মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু, বিপদে সাধারণের ভরসা ব্যারিস্টার রফিক-উল হক চলে গেলেন। পূর্ণ বয়সে তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে এটাই আমার কাছে পরম শান্তি ও স্বস্তির। অথচ যিনি দেশকে জন্ম দিয়েছিলেন দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাভাবিক মৃত্যু নসিব হয়নি। কিছু কুলাঙ্গার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। ইদানীং যে কোনো মৃত্যুসংবাদ শুনলেই বঙ্গবন্ধুর কথা বড় বেশি করে মনে পড়ে, বুকের ভিতর তোলপাড় করে। প্রশ্ন জাগে, তার কি স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকার ছিল না? বড় কষ্ট হয়। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ছিলেন একজন মাটির মানুষ। ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গে একটা নিবিড় সম্পর্ক ছিল। যখনই গিয়েছি আপনজনের মতো বুকে আগলে নিয়েছেন। তাঁর মা এবং স্ত্রী ছিলেন আমার পরম ভক্ত। মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় তাঁরা আমায় ভীষণ ভালোবাসতেন। কত সময় কতভাবে কত কারণে তাঁর কাছে গিয়েছি কত আলাপ-আলোচনা করেছি, সব সময় তাঁকে দেশের কথা বলতে শুনেছি। বর্তমান আওয়ামী লীগ তাঁকে তেমন পছন্দ করত না। কারণ নেত্রী হাসিনা এবং বেগম খালেদা জিয়া উভয়ের তিনি আইনজীবী ছিলেন। শুধু আইনজীবী বললে ভুল হবে, হিতৈষী ছিলেন। তবে আওয়ামী লীগ ভাবাপন্ন আইনজীবীদের কারও কারও মধ্যে তাঁকে নিয়ে হতাশা দেখেছি। আবার দল-মত-নির্বিশেষে সিংহভাগ আইনজীবী তাঁকে একজন আইনের মহিরুহের মতো চিন্তা করতেন, ভালোবাসতেন। মিরপুর পুলিশ ক্লাবের এক বিয়েতে গিয়েছিলাম। যতক্ষণ ছিলাম এক মুহূর্তের জন্যও কাছছাড়া করেননি। মঞ্চে বর-কনে দেখতে যাওয়া, খেতে বসা সব সময় আমাকে কাছে রেখেছিলেন। তাঁর সান্নিধ্য আমাকে পুলকিত করত। ভীষণ ভালো লাগত যতক্ষণ তাঁর কাছে থাকতাম- দেশ আর মানুষের কথা ছাড়া অন্য কোনো কথা হতো না। বেগম খালেদা জিয়া এবং বদরুদ্দোজা চৌধুরীর অনেক দাওয়াতে তাঁকে পেয়েছি। তিনি জোর করে পাশে বসাতেন। একটি কমিউনিটি সেন্টারে বেগম খালেদা জিয়ার পাশে তাঁর সিট ছিল। আমাকে ছাড়া কিছুতেই বসছিলেন না। ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের পাশেই বিএনপির কোনো নেতা বসেছিলেন। শেষে তাঁকে এক সিট সরিয়ে আমার জায়গা করা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী হিসেবে তিনি আমাকে ভীষণ ভালোবাসতেন, সম্মান দিতেন। একবারের কথা, তখন আমি আওয়ামী লীগ ছেড়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করেছি। গিয়েছিলাম তাঁর পল্টনের বাড়িতে। অনেক জায়গা নিয়ে চমৎকার বাড়ি। অনেক আলাপ-আলোচনা উৎসাহ দিয়ে একটা প্যাকেট হাতে গুঁজে দিয়েছিলেন। তাতে কয়েক লাখ টাকা ছিল। তাঁর গলায় একটা গামছা পরিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। মাসখানেক পর হাই কোর্টে তাঁর চেম্বারে কী কারণে যেন গিয়েছিলাম। দেখা হতেই বললেন, ‘সিদ্দিকী সাহেব, আমাকে আরও দুটা গামছা দিতে হবে- আমার মা এবং স্ত্রীর জন্য।’ কয়েকদিন পর আবার তাঁর বাড়ি গিয়েছিলাম টাঙ্গাইলের মিষ্টি এবং গামছা নিয়ে। কতটা যে খুশি হয়েছিলেন বলে বোঝাতে পারব না। খুশি হলে মানুষ যে কতটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে সেদিন তাঁকে দেখে বুঝেছিলাম। গামছা গলায় তাঁর বৃদ্ধা মাকে দেখিয়ে ছিলেন। তাঁর স্ত্রী নিজে হাতে নাশতা বানিয়ে খাইয়েছিলেন। তিনি চলে যাওয়ায় বড় বেশি করে মনে পড়ছে। বঙ্গবন্ধু তাঁকে খুব ভালোবাসতেন, স্নেহ করতেন। বঙ্গবন্ধু থাকতে কতবার দেখা হয়েছে। তখন আমার আকাশছোঁয়া নাম। তিনি তখন একজন সাধারণ আইনজীবী। তখনো আমার সঙ্গে তাঁর কথা বলার প্রচন্ড আগ্রহ দেখেছি। আমাকে টাঙ্গাইলের গভর্নর করা হলে সস্ত্রীক শুভেচ্ছা জানাতে আমার বাবর রোডের বাড়ি এসেছিলেন। সেই সম্পর্কের কোনো দিন অবনতি ঘটেনি। ১৬ বছর পর ভারত থেকে যখন দেশে ফিরি তখনো এসেছিলেন। দেখা হলেই বলতেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভক্ত তো আমরা কতই ছিলাম। কিন্তু আপনার মতো কেউ সর্বস্ব ত্যাগ করতে পারেনি। আগামী দিনের ইতিহাসে বাংলাদেশ থাকলে আপনি থাকবেন, বঙ্গবন্ধুর নামের সঙ্গে আপনার নাম উচ্চারিত হবে।’ তিনি যখন এসব বলতেন তাঁর বলার মধ্যে কোনো কৃত্রিমতা দেখতাম না, প্রচুর আন্তরিকতার ছাপ ফুটে উঠত। সব সময় খোঁজখবর করতেন। আমি যতবার তাঁকে ফোন করেছি, তাঁর চাইতে অনেক বেশি তিনি আমাকে করেছেন। মনে হতো একজন পরম হিতৈষী। সেই মানুষটা যখন চলে গেলেন তখন কিছুটা অসহায়বোধ তো হচ্ছেই। তবে তিনি ভালোভাবে গেছেন এইটাই যা সান্ত্বনা।
অনেকে দয়া করে লোকজনকে সাহায্য করে। তিনি ছিলেন অন্যরকম। অনেকটা আমাদের মতো। আমি যেমন মনে করি, কাউকে কিছু দিতে পারলে আমার উপকার হলো, তিনিও তেমনি। কত স্কুল-কলেজ-মসজিদ-মাদ্রাসা করেছেন তার লেখাজোখা নেই। চন্দ্রায় বিরাট আধুনিক হাসপাতাল করেছেন। তা ছাড়া রাজধানীর অনেক হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা তিনি। একদিন হঠাৎ কথায় কথায় আমার সখীপুরে আবদুস সামাদ ডাক্তারের কথা উঠেছিল। তাকে বোধহয় ব্যারিস্টার রফিক-উল হক দুখানা ডায়ালাইসিস মেশিন দিয়েছিলেন। বলেছিলাম, সামাদ আমার এলাকার মানুষ। ও ডায়ালাইসিস মেশিন পাওয়ার কী করে যোগ্য হলো? বলেছিলেন, ‘সিদ্দিকী সাহেব, যোগ্যতা বিচার করে কী হবে? এসে বলল দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম।’ আসলে তাঁর মধ্যে কোনো ঘোরপ্যাঁচ ছিল না। এমন সহজ-সরল মানবিক চেতনার মানুষ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। কদিন পর হয়তো কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমার বাবা ছিলেন মোক্তার। একসময় দারুণ প্রসার ছিল। দিনে লাখ টাকা উপার্জন করতেন। তাঁকেও দেখতাম কতজনকে কতভাবে সাহায্য করতেন। কিন্তু মক্কেলদের কাছ থেকে টাকা নিতে ছাড় দিতেন না। কারও মামলা হয়তো বছরের পর বছর বিনা পারিশ্রমিকে করতেন। আবার কারও মামলায় এক পয়সাও ছাড় নেই। বাবার কাছ থেকেই শুনেছি, সোনারুরা মায়ের গহনা বানাতেও একটু-আধটু চোষে। আর কিছু না হলেও কষ্টিপাথরে ঘষে কিছু সোনা রেখে দেয়। উকিলরাও নাকি তেমনি বাবার কাছ থেকেও টাকা নেয়। কিন্তু ব্যারিস্টার রফিক-উল হক তেমন ছিলেন না। একজন নিরেট ভদ্রলোক ছিলেন, ভালো মানুষ ছিলেন। আল্লাহ তাঁকে তাঁর সব ভুলত্রুটি ক্ষমা করে বেহেশতবাসী করুন।
বহুদিন পর ভূঞাপুরে গিয়েছিলাম। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। হঠাৎই লতিফ তালুকদার নামে একজন এগিয়ে এসে বলল, স্যার, আমার ঘরে এসে বসেন। রাস্তা থেকে ৪০-৫০ হাত দূরে তার ঘর। গিয়ে বসেছিলাম ঘরের সামনে আমগাছতলে। দু-তিন শ লোক জড়ো হয়েছিল। তারা নানান কথাবার্তা বলছিল। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন সেখানে। একসময় বাংলাদেশ প্রতিদিন সামনে মেলে ধরলেন। বললেন, ‘স্যার, এই যে আপনার লেখা।’ সেদিন ছিল বুধবার। মঙ্গলবারে আমার লেখা ছিল। হঠাৎই তিনি বললেন, ‘সামনের এটা শাহীনদের বাড়ি।’ প্রথম তার কথা বুঝতে পারিনি। একটু পরে বুঝলাম এ তো আমার ভাগ্নিজামাই শাহীনের কথা বলছে। শাহীনের স্ত্রী ইমু টাঙ্গাইল ফজিলাতুন নেছা মুজিব মহিলা কলেজের অধ্যাপক। এই ইমু আমার দীপকে যে যতœ করেছে তার তুলনা হয় না। আমি যখন বর্ধমানে, আমার স্ত্রী দেশে এলে ভূঞাপুরের বদি আর ভাগ্নি ইমু পাল্লাপাল্লি করে দীপকে কোলে রাখত। ছেলেবেলায় দীপ বেশ নাদুসনুদুস ছিল। ইমু একবার ফোনে বলেছিল, ‘খালু, তোমার ছেলেকে আমরা মাটিতে নামতে দিই না, কোলে কোলে রাখি।’ ইমুর সে কথা এখনো আমার কানে বাজে, প্রাণে বাজে। কখন কার কোন কথা মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়, বলা যায় না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমন আমার দীপকে অসম্ভব আদরযতœ করেছেন, ইমুও ঠিক তেমনি। তাই ইমুর শ্বশুরবাড়ি দেখে এবং তার চাচাশ্বশুরের আতিথেয়তায় ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। করোনার প্রাদুর্ভাব এবং নানা ঝামেলায় ভিতরের খুশি বহতা নদীর মতো কলকল করে বয়ে চলে না। কিন্তু সেদিন অসম্ভব আনন্দ পেয়েছিলাম। বুকের ভিতর থেকে কোনো আনন্দ বেরিয়ে এলে তার তুলনা হয় না। এ আনন্দও ছিল তেমন। এরপর গিয়েছিলাম ভূঞাপুর থানায়। সেখানে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উল্লাপাড়ার মো. রাশিদুল ইসলামকে ভীষণ ভালো লেগেছে। তার আচার-ব্যবহার কথাবার্তা খুবই মার্জিত। মুক্তিযুদ্ধে উল্লাপাড়া কলেজের ভিপি আবদুল জলিল আমার সঙ্গে ছিল। সেজন্য উল্লাপাড়া আমার খুবই প্রিয়। কয়েক মিনিট পর গিয়েছিলাম ইউএনও অফিসে। ইউএনও একজন মহিলা। মেয়েদের প্রতি আমার দুর্বলতা সবার ওপরে। আমি মেয়েদের মা, বোন, মেয়ে ছাড়া অন্য চোখে দেখি না। ইউএনওর বাড়ি লালমনিরহাট। লালমনিরহাটের মজিবুর রহমান এমপি ছিলেন অসাধারণ মানুষ। কোনো মারপ্যাঁচ বুঝতেন না। টানা সাত-আটবার এমপি হয়েছেন। তাও বিত্ত তাঁকে স্পর্শ করেনি। তাঁর এলাকার মানুষ ইউএনও চেয়ারম্যানদের নিয়ে সভা করছিলেন। সবার মুখেই ছিল শিঙ্গাড়া, স্যান্ডউইচ বা অন্য খাবার। সব চেয়ারম্যানই উঠে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ইউএনও উঠবেন কি উঠবেন না দ্বন্দ্বে ছিলেন। আমি চার-পাঁচ মিনিট ছিলাম। যেজন্য গিয়েছিলাম তা বলার পর ভদ্রমহিলা জিজ্ঞেস করলেন, ‘ব্যাপারটা আমাকে জানালেন নাকি কিছু করতে বললেন?’ আমি বলেছিলাম উপজেলার প্রধান নির্বাহী হিসেবে আপনি ব্যাপারটা দেখবেন যেন অন্যায় না হয়। উঠে এসেছিলাম। তিনি সেবারও চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ানোর প্রয়োজনবোধ করেননি। সাধারণত অনেক অর্ফিসে দেখেছি কর্তাব্যক্তিরা আমাদের মোটামুটি গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দেন। মন্ত্রী সাহেবরা, সেক্রেটারি সাহেবরা লিফটে উঠিয়ে দেন। টাঙ্গাইলের ডিসি, এসপি, ভূঞাপুরের ওসি কেউ এ কাজে কখনো অনীহা দেখাননি। কিন্তু ইউএনও ভদ্রমহিলা তার চেয়ার ছাড়েননি, তার ঘরের দরজা পর্যন্তও এগিয়ে আসেননি। আমি জীবনে এ রকম অপদার্থ কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা দেখিনি। তাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিচ্ছি, প্রশিক্ষণ দিয়ে যাতে একটু আদব-কায়দা শেখানো হয়।
গত পর্বে মাননীয় সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনকে নিয়ে দুই কথা লিখেছিলাম। যা লিখেছি আত্মিক তাগিদেই লিখেছি। অনেক মানুষ তাদের মতামত জানিয়েছেন। দু-একজন ছাড়া সবাই খুশি হয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, ডিসির জ্বালায় শেষ হয়ে গেলাম। ডিসি, ইউএনওদের নিয়ে এমন হবে কেন? বছর দুই আগে আমি একবার ফরিদপুর গিয়েছিলাম মধুখালীর বেসদি গ্রামে। এক ছেলে মা-বাবার কাছ থেকে জমি লিখে নিয়ে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল। পত্রিকায় সে খবর দেখে গিয়েছিলাম। শাহ আবু জাফরের এলাকা। এখন সেখানকার এমপি মুকুল ভাইয়ের মেয়ে বন্যার জামাই আবদুর রহমান। সেবার ফরিদপুর সার্কিট হাউসে খেয়েছিলাম। তখনকার ডিসি উম্মে সালমা তানজিয়া অসাধারণ। সামনে দাঁড়িয়ে মায়ের মতো খাইয়েছিলেন। এক পর্যায়ে বলেছিলেন, ‘আমি আর কি আপনার ভক্ত, আমার স্বামী আপনার পায়রা ভক্ত।’ পায়রা ভক্ত কথাটি আগেও শুনেছি। কিন্তু সেদিনের মতো হৃদয়ে স্পর্শ করেনি। সেই ফরিদপুরের ডিসি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের বিরক্তি দেখে বড় খারাপ লাগে। নিক্সন চৌধুরী হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন। বোকাসোকা মানুষ তাই বুঝতে পারলাম না। আদালতে নির্বাচনী বিধি ভাঙার অভিযোগ এনেছে নির্বাচন কমিশন। মামলাটি বেলেবুল, না নন বেলেবুল বুঝতে পারলাম না। কত শত অভিযোগ আসে। কোর্ট বিচার করবে, তারপর যা হওয়ার হবে। খুন-খারাপি-রাহাজানি হলে আগাম জামিনের প্রশ্ন ছিল, কিন্তু এখানে তো কোনো ভাইওলেন্স হয়নি। বরং সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তারা বিধি লঙ্ঘন করেছেন। আওয়ামী লীগ করলে, অগাধ সম্পত্তি থাকলে মনে হয় যা খুশি তাই করা যায়। নিক্সনের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী জনাব জাফর উল্লাহ চৌধুরী হয়তো তাই করেছেন। দেখা যাক, অপেক্ষায় থাকলাম।
ইদানীং প্রতি রবিবার বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজামের লেখা পাই। চমৎকার লাগে। তবে সেদিনের ‘ক্ষমতা কাহিনি : মৈত্রেয়ী ও জিনাত মহলের অমর প্রেম’ লেখাটি আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে। চমৎকার। অনেক মানুষ সুখের সময় পাশে থাকতে পারলেও চরম বিপর্যয়ে পাশে থাকতে পারে না। শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর ও স্ত্রী জিনাত মহলের ক্ষেত্রে কেন অনেকের ক্ষেত্রেই এমনটা হয়। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে। নঈম নিজামকে ভালোবাসি, স্নেহ করি। আজ বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক, নিউজ টোয়েন্টিফোরের সিইও এসব হয়তো কোনো দিন থাকবে না, কিন্তু লেখা থাকবে। তাই তাকে মন দিয়ে নিয়মিত লিখতে বলেছি। সাধারণ পাঠকও পীর হাবিব এবং নঈম নিজামের লেখা খুবই পছন্দ করে।
লেখক : রাজনীতিক।
www.ksjleague.com