মঙ্গলবার, ১৮ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

সড়ক দুর্ঘটনা

ট্রাফিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিন

দেশের সড়কপথে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক পরিবারে কান্নার রোল উঠছে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বজনদের কারোর হতাহতের ঘটনায়। এমনকি করোনাকালে আন্তনগর ও দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন সার্ভিস বন্ধ থাকার নির্দেশনা সত্ত্বেও ঈদের ছুটির চার দিনে বিভিন্ন সড়কে প্রাণ গেছে ৩৫ জনের। আহতের সংখ্যাও দেড় শতাধিক। এর মধ্যে সিলেটে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। গোপালগঞ্জে চার দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় মা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন।  চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ট্রাকের সঙ্গে ভটভটির  মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন ধানকাটা শ্রমিক নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন। এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে আরও অনেক এলাকায়। করোনকালে লকডাউনের মধ্যে সড়কে মৃত্যুর মিছিল এবং এ নিয়ে খবরাখবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর জনমনে অস্বস্তি সৃষ্টি করছে। সড়ক দুর্ঘটনা মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি কেড়ে নিলেও তা বাস ও ট্রাক চালকদের সংবেদনশীলতায় প্রভাব বিস্তার করতে ব্যর্থ হয়েছে এমন বলা খুব একটা অমূলক হবে না। সড়ক দুর্ঘটনাজনিত অপরাধ রোধে যে আইন আছে তাতে অপরাধীর জন্য কড়া শাস্তির বিধান থাকলেও তার কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী দেশের ট্রাফিকব্যবস্থার যাচ্ছেতাই অবস্থা। চালক, পথচারী সব ক্ষেত্রে আইন না মেনে চলার প্রবণতা এতটাই প্রকট যে আতঙ্কিত না হয়ে পারা যায় না। বাস ও ট্রাক চালকরা তো সড়কপথে যথেচ্ছতা প্রদর্শনকে নিজেদের অধিকার বলে ভাবেন। দেশের যানবাহন চালকের সিংহভাগই প্রশিক্ষণ ছাড়াই গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেয়েছেন। যানবাহনের তুলনায় ড্রাইভিং লাইসেন্সের সংখ্যা কম থাকা কোনো সুস্থতার প্রমাণ নয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্ব যাদের তাদের মধ্যে সততার সংকট থাকায় প্রশিক্ষিত চালক হলেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যাবে সে নিশ্চয়তা নেই বললেই চলে। উৎকোচের বিনিময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার সুযোগ থাকায় কোনোরকমে গাড়ি চালাতে পারলেই যে লাইসেন্স মেলে তা এক প্রতিষ্ঠিত সত্যি। সড়ক দুর্ঘটনায় রাশ টানতে হলে এ প্রবণতায় বাদ সাধতে হবে। ট্রাফিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও সমভাবে জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর