বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
স্বাস্থ্য

অতিরিক্ত চিনি ক্ষতিকর

বেশির ভাগ মানুষ সকালে চা বা কফির সঙ্গে এক থেকে দুই চামচ চিনি মিশিয়ে খান। তারা জানেন না এই অতিরিক্ত চিনি আমাদের দেহের জন্য কতখানি ক্ষতিকর। কারণ চিনির ক্ষতিকর প্রভাবগুলো খুব অল্প সময়ে চোখে পড়ে না তাই আমরা সহজে বিশ্বাস করি না যে চিনি আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। আর ক্ষতিকর চিনির উপস্থিতি বেশি দেখা যায় জাঙ্ক ফুডে। এ ছাড়া প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রচুর চিনি ও অন্যান্য আর্টিফিশিয়াল মিষ্টি বিদ্যমান থাকে। আমরা বিভিন্ন খাবার যেমন ফল, শস্য, বাদাম, শাকসবজি থেকে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় এক ধরনের চিনি পাই। আমরা মনে করি এসব খাবারে আসলে কোনো চিনি থাকে না, এজন্য অতিরিক্ত মিষ্টি হিসেবে রিফাইন্ড বা দানাদার চিনি যোগ করি। কিন্তু এ চিনি আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। ব্লিচিং ও সালফোনেশন পদ্ধতিতে চিনি রিফাইন্ড করা হয় এবং সেখানে সালফার ব্যবহৃত হয়। এ সালফার বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান এবং আমরা যখন চিনি বা চিনিজাতীয় যে কোনো মিষ্টিদ্রব্য গ্রহণ করি তখন খুব অল্প পরিমাণে এ বিষাক্ত উপাদান আমাদের দেহে প্রবেশ করে। আমাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় খাদ্য তালিকায় শর্করাজাতীয় খাবারে যে পরিমাণ চিনি থাকে তা আমাদের দেহের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। প্রথমে এ চিনি গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয় এবং পরে দেহে শক্তি উৎপাদন করে। যখন দেহে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি চিনি গ্রহণ করা হয় তখন তা উপকারী না হয়ে বরং ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং প্রচুর শারীরিক অসুবিধা দেখা দেয়। বর্তমানে বেশির ভাগ খাবারে প্রচুর চিনি থাকে। যেমন আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি, কার্বোনেটেড ড্রিংকস ও অন্যান্য সফট ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস এবং প্রক্রিয়াজাত অনেক খাবারে। আমরা রোগের জন্য সব সময় ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও অন্যান্য প্যাথাজোনকে দায়ী করি কিন্তু চিনিকে করি না, কারণ চিনির প্রভাব দ্রুত আমাদের শরীরে পড়ে না। যদি এখনো কারও মনে চিনি বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকে কেন চিনি আমাদের জন্য ক্ষতিকর তাহলে নিচের তালিকাটি লক্ষ্য করুন এবং জানুন দেহে চিনির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে- ১. দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় ২. দেহে খনিজ লবণের ভারসাম্য নষ্ট করে ৩. শিশুদের হাইপার অ্যাকটিভিটি, বদমেজাজি, অমনোযোগী ও একরোখা আচরণের জন্য দায়ী চিনি ৪. দেহের ট্রাইগ্লিসারইডের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দেয় ৫. ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের (সংক্রামক যোগ) বিরুদ্ধে শরীরে যে প্রতিরোধব্যবস্থা থাকে তা দুর্বল করে দেয় বা কমিয়ে দেয় ৬. টিস্যুর স্থিতিস্থাপকতা এবং কার্যক্রম কমিয়ে দেয় ৭. উপকারী হাইডেনসিটি লিপেপ্রোটিন কমিয়ে দেয় ৮. শরীরে ক্রোমিয়ামের অভাব দেখা দেয়।

ডা. আলমগীর মতি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর