বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ইউসুফ-জুলেখা

ইউসুফ-জুলেখা  বাংলা রোমান্টিক  কাব্য। পনেরো শতকে  শাহ মুহম্মদ সগীর এটি রচনা করেন। তিনি ছিলেন গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের (১৩৮৯-১৪১০) সভাকবি। তিনি সুলতানের নির্দেশে কিতাব-কোরআন থেকে কাহিনি সংগ্রহ করে প্রেমের মাধ্যমে ধর্মের বাণী শোনাবার জন্য দীর্ঘ এ আখ্যানকাব্য রচনা করেন। কোরআনে ইউসুফ-জুলেখার প্রেমকাহিনির মাধ্যমে নীতিশিক্ষা ও আল্লাহর মহিমা প্রচার করা হয়েছে। বাংলা কাহিনিকাব্যে ধর্মভাবের পাশাপাশি মানবপ্রেমের আবেগ-উচ্ছ্বাস প্রকাশিত হয়েছে। এর সঙ্গে ইসলামের বিজয় গৌরবও কীর্তিত হয়েছে। গ্রন্থের শেষে ইউসুফের ভাই বিনিয়ামিন ও বিধুপ্রভার অলৌকিক প্রেমকথা আছে। এটি কবির নতুন সংযোজন। কাব্যটি পয়ার ও ত্রিপদী ছন্দে রচিত এবং ছোট ছোট ঘটনায় বিভক্ত। অনুচ্ছেদশীর্ষে রাগ-তালের উল্লেখ থাকায় অনুমিত হয়, কাব্যটি গীতোপযোগী করে রচিত এবং একসময় তা গীত হতো। কবির ভাষায় ও আঙ্গিক পরিচর্যায় নাগরিকতার ছাপ আছে। শাহ মুহম্মদ সগীর ছাড়াও মধ্যযুগে  আবদুল হাকিম,  শাহ্ গরীবউল্লাহ, গোলাম সফাতউল্লাহ, সাদেক আলী ও ফকির মোহাম্মদ ইউসুফ-জুলেখা কাব্য রচনা করেন। তাঁদের মধ্যে প্রথম দুজন বাংলা এবং অন্যরা দোভাষী পুথির মিশ্র ভাষা ব্যবহার করেন।  ফারসি ভাষায় ফেরদৌসি (১১ শতক) ও জামি (১৫ শতক) ইউসুফ-জুলেখার প্রেমকথা অবলম্বনে সুফি অধ্যাত্মতত্ত্বের কাব্য রচনা করেন। বাংলার কবিরা কেউ কেউ তাঁদের অনুসরণ করতে পারেন।

অপূর্ব আজাদ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর