খোদার পাথর ভিটা বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ে (পুন্ড্রনগর) অবস্থিত একটি টিলা বা ঢিবি। ঢিবিটির উপরিভাগে প্রাপ্ত গ্রানাইট পাথরের প্রকাণ্ড একটি চৌকাঠ (২.৮৪ মি দ্ধ ০.৭১ মি দ্ধ ০.৭৪ মি) থেকেই স্থানীয় জনগণ ঢিবিটির এ অদ্ভুত নামকরণ করেছে। এ প্রকাণ্ড চৌকাঠটিতে রয়েছে দরজার হুড়কো লাগানোর দুটি ছিদ্র, ওপরের দিকে ফোকর এবং উদ্গত ফুলের নকশা। স্থানীয় হিন্দু ও মুসলমানরা নগ্ন পায়ে পাথরের এ চৌকাঠটিতে ভক্তি নিবেদন করত এবং এখনো করে।
১৯৭০ সালে এ ঢিবিতে (৪৬.৯৪ মি দ্ধ ৪০.৮৪ মি দ্ধ ২.৪৪ মি) খননকার্যের ফলে একটি মন্দির এবং ছোটখাটো কিছু প্রত্ননিদর্শন পাওয়া গেছে। মন্দিরটি পূর্বাভিমুখী একটি আয়তাকার বৌদ্ধ মন্দির। এতে রয়েছে পাথরে বাঁধানো মেঝে এবং ভিত-দেয়াল। ভিতের ওপর স্থাপিত দেয়াল ছিল কাদামাটিতে গাঁথা ইটের তৈরি। দরজার চৌকাঠের বাজু, সরদল এবং দরজার ওপরের দিকের অলংকৃত অংশ সম্ভবত পাথরে নির্মিত হয়েছিল। এ স্থানে খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত খোদাইকৃত প্রস্তরখণ্ডগুলোর একটিতে (৬৯ মি দ্ধ ২০ সেমি দ্ধ ১৮ সেমি) ফুলের উদ্গত নকশার মধ্যে একই সারিতে আসীন তিনটি বৌদ্ধমূর্তি রয়েছে।
বর্তমানে এটি রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে রক্ষিত আছে। প্রকাণ্ড চৌকাঠটি ব্যতীত প্রত্নস্থলটির কাঠামোর ধ্বংসাবশেষ এখনো মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে। প্রত্নস্থল ও এর আশপাশে বহুসংখ্যক ইট ও পাথরের টুকরা ছড়িয়ে রয়েছে। এ ঢিবির ধ্বংসাবশেষ পাল আমলের প্রথম দিকের (আনু. খ্রিস্টীয় আট শতক) বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জাফর খান