‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর...’। জয়ধ্বনি করার মতোই কৃতিত্ব দেখিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। পাকিস্তানের মাটিতে ক্রিকেটের অন্যতম পরাশক্তিকে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছে টাইগাররা। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে হারিয়েছিল ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। ক্রিকেটকে বলা হয়, অনিশ্চয়তার খেলা। এটি এমন এক খেলা যেখানে নিশ্চিতভাবে বলা যায় না, অমুক দল জিতবে। ফলে টাইগার সমর্থকরাও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় অর্জন রাওয়ালপিন্ডির প্রথম টেস্টের ফলাফল নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। কিন্তু ৬ উইকেটে দ্বিতীয় টেস্টে জয়ী হয়েছে টাইগাররা পাকিস্তানকে ‘বাংলা ওয়াস’ করে। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্ট ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। ৬ উইকেটে জয়ী দ্বিতীয় টেস্টে চাপের মুখে অসাধারণ ব্যাটিং করে ম্যাচসেরা হয়েছেন লিটন দাস। সব মিলিয়ে সিরিজসেরা হয়েছেন স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে পাকিস্তানের মাটিতে ২৩ বছরের ব্যবধানে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। কোনো সন্দেহ নেই, বাংলাদেশের দুই যুগের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে স্মরণীয় জয়, সবচেয়ে বড় সিরিজ জয়। এখন পর্যন্ত টাইগাররা টেস্ট সিরিজ জিতেছে ৯টি। হোয়াইটওয়াশ করেছে চারটি। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়টি ছাড়িয়ে গেছে সবকটিকে। সব মিলিয়ে ১৪৪ টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ২১টি। বাংলাদেশ এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছে হাতেগোনা একটি-দুটি। এবার শুধু চোখে চোখ রেখে লড়াই-ই করেনি, দাপুটে ক্রিকেট খেলে টেস্ট দুটিকে একপেশে করেছে। বৃষ্টিভেজা দুই টেস্টে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা খেলেছে নিজেদের সব সামর্থ্য নিয়ে। দীর্ঘ পৌনে ১৬ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটার পর দেশে সর্বস্তরের মানুষ যখন বিজয় উৎসব পালন করছে, তখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্টে সিরিজ জয় জনগণের বিজয়কে করেছে আরও মহিমান্বিত। টাইগারদের অভিনন্দন।