(পূর্ব প্রকাশের পর)
প্রথম অধ্যায় : সৃজনশীল প্রশ্ন
খেলাধুলা ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষার্থীর চারিত্রিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটায়। এর মাধ্যমে দৈহিক গঠন মজবুত ও সুন্দর হয়, শারীরিক সক্ষমতা ও কার্যক্ষমতা এবং মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
ঘ. উত্তর : মিলন এর শারীরিক ও মানসিক অনগ্রসরতা দূরিকরণে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার দিকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর স্বপক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হলো। শারীরিক শিক্ষা দেহ ও মনের সামঞ্জস্য উন্নয়ন সাধন করে। শারীরিক শিক্ষা ছাড়া শিক্ষার পূর্ণতা আসে না। যে সব গুণ থাকলে দেশের প্রতিটি নাগরিক সুস্থ, সবল ও দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন হয়ে গড়ে ওঠে এবং নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়, শারীরিক শিক্ষা সে সব গুণাবলী অর্জনে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে। নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্ব গঠনেও শারীরিক শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। দেহকে ঠিক রাখার জন্য সব সময় দেহের ভিতরে কতগুলো প্রক্রিয়া কাজ করে। এই প্রক্রিয়াগুলো সুষ্ঠুভাবে চলার জন্য প্রয়োজন শারীরিক সুস্থতা। শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশের জন্য শারীরিক শিক্ষা অত্যাবশ্যক। শারীরিক শিক্ষা শিক্ষার্থীর গতিশীল কাজের জৈবিক চাহিদা পূরণ করে, শিক্ষার্থীর মানসিক ও বুদ্ধিমত্তার ভিত গড়ে তোলে। শিক্ষার্থীর মনে সৃজনশীলতার অনুভূতি জাগ্রত করে। এখানে চিত্তবিনোদন ও অবসর সময় কাটানোর উপায় নির্বাচনে সাহায্য করে। শারীরিক শিক্ষা শুধু পাঠ্যপুস্তকের অনুশীলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় এর ব্যবহারিক দিকও নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যক্তি জীবনে প্রয়োগ করতে হয়।
৪। ইভা ও হাসি তাদের বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নিয়ে গল্প করছিল। তারা জানে, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শারীরিক শিক্ষার একটি কর্মসূচি। দুটি বিদ্যালয়ের মধ্যে ফুটবল প্রতিযোগিতাও শারীরিক শিক্ষার একটি কর্মসূচি। এসব কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ক) লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী?
খ) শারীরিক শিক্ষার নীতিসমূহ কী কী?
গ) উদ্দীপকে আলোচিত ক্রীড়া সূচিগুলোর মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ কর।
ঘ) শেষোক্ত ক্রীড়া সূচিটি খেলোয়াড়দের সার্বিক উৎকর্ষ সাধনে কীভাবে সাহায্য করে—বিশ্লেষণ কর।
ক) উত্তর : লক্ষ্য হলো চূড়ান্ত গন্তব্যস্থল আর উদ্দেশ্য হলো সেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর সংক্ষিপ্ত ও নির্দিষ্ট পদক্ষেপসমূহ।
খ) উত্তর : নীতি গড়ে ওঠে বাস্তব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এবং নীতি ব্যবহূত হয় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে। নীতির গ্রহণ ও যোগ্যতা পরীক্ষিত হয় তার প্রয়োগ এবং কার্যকারিতার ওপর। উেসর প্রকৃতি অনুসারে শারীরিক শিক্ষার নীতিসমূহকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন, (১) জীব বৈজ্ঞানিক নীতি (২) মনোবৈজ্ঞানিক নীতি (৩) সমাজ বৈজ্ঞানিক নীতি (৪) জীব বলবিদ্যার নীতি এবং (৫) দার্শনিক নীতি।
গ) উত্তর : উদ্দীপকে আলোচিত ক্রীড়া সূচিগুলোর মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করা হলো :
১। একটি অন্তঃক্রীড়া সূচি এবং অপরটি আন্তঃক্রীড়া সূচি।
২। নিজেদের মধ্যে যে খেলাধুলা বা প্রতিযোগিতা হয় তাকে অন্তঃক্রীড়া সূচি বা ইন্ট্রমুরাল স্পোর্টস বলে। অপরদিকে যে সব খেলাধুলা বা প্রতিযোগিতা এক স্কুলের সঙ্গে অন্য স্কুল, এক কলেজের সঙ্গে অন্য কলেজ এবং এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে হয় তাকে আন্তঃক্রীড়া সূচি বা এক্সট্রামুরাল স্পোর্টস বলে। ৩। অন্তঃক্রীড়া সূচি পরিচালিত হয় বিদ্যালয়ের চার দেয়ালের মধ্যে; অন্যদিকে আন্তঃক্রীড়া সূচি পরিচালিত হয় বিদ্যালয়ের চার দেয়ালের বাইরে।
৪। একটি পরিচালিত হয় বিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের মধ্যে এবং অপরটি পরিচালিত হয় অপর একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।
৫। অন্তঃক্রীড়া সূচি সবার জন্য কিন্তু আন্তঃক্রীড়া সূচি বাছাই করা খেলোয়াড়দের জন্য।
৬। অন্তঃক্রীড়া সূচির উদাহরণ—বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, নবম বনাম দশম শ্রেণির মধ্যে ফুটবল প্রতিযোগিতা অথবা ক শাখার সঙ্গে এক হাউসের সঙ্গে অন্য হাউসের প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। আন্তঃক্রীড়া সূচির উদাহরণ আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়, আন্তঃক্লাব ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।
ঘ) উত্তর : যে সমস্ত খেলাধুলা বা প্রতিযোগিতা এক স্কুলের সঙ্গে অন্য স্কুল, এক কলেজের সঙ্গে অন্য কলেজ এবং এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে হয় তাকে আন্তঃক্রীড়া সূচি বা এক্সট্রামুরাল স্পোর্টস বলে। এ সব প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজেদের যোগ্যতা যাচাই এবং সার্বিক উৎকর্ষ সাধন সম্ভব হয়। আন্তঃক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন যোগ্যতা সম্পন্ন ছাত্ররা অংশগ্রহণ করে। ফলে ভালো খেলোয়াড়দের সহচার্যে এসে তাদের আচার-ব্যবহার, উন্নতমানের কৌশল, অভ্যাস প্রভৃতি হতে অনেক কিছু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনোভাব বাড়ায়, দলগত উৎকর্ষ এবং সমঝোতা বৃদ্ধি করে। প্রতিযোগিতার মনোভাব ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পায়। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের মধ্যে উদারতা এবং দেশপ্রেম বৃদ্ধি পায়। খেলোয়াড়দের দায়িত্ব ও কর্তব্য বৃদ্ধি পায়। অন্যের মতামতের প্রতি গুরুত্ব, সহনশীলতা, ধৈর্য এবং গণতান্ত্রিক মনোভাব বৃদ্ধি পায়। আন্তঃক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক উৎকর্ষ সাধিত হয়। এখানে প্রত্যেক খেলোয়াড় প্রত্যেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করে। এতে খেলোয়াড়দের নৈতিক বিকাশ ঘটে। ফলে দলীয় সমঝোতার বিকাশ সাধিত হয়।