প্রদত্ত অনুচ্ছেদটি পড়ে ১ ও ২ নম্বর ক্রমিকের উত্তর দাও :
‘সার্থক জনম মাগো জন্মেছি এ দেশে।’ কবির এ কথার অর্থ—আমাদের সৌভাগ্য ও সার্থকতা যে আমরা এ দেশে জন্মেছি। বাংলাদেশের প্রায় সব লোক বাংলায় কথা বলে। আমরা বাঙালি। তবে আমাদের দেশে যেমন রয়েছে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য, তেমনি রয়েছে মানুষ ও ভাষার বৈচিত্র্য। বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকজন। এদের কেউ চাকমা, কেউ মারমা, কেউ মুরং, কেউ তঞ্চঙ্গা ইত্যাদি। এ ছাড়া রাজশাহী আর জামালপুরে রয়েছে সাঁওতাল ও রাজবংশীদের বসবাস। তাদের রয়েছে নিজ নিজ ভাষা। একই দেশ, একই মানুষ, অথচ কত বৈচিত্র্য। এটাই বাংলাদেশের গৌরব। সবাই মিলেমিশে আছে যুগ যুগ ধরে। এ রকম খুব কম দেশেই আছে। আমাদের বাংলাদেশের বাইরেও অনেক বাঙালি আছে। বাংলাদেশের এই যে মানুষ, তাদের পেশাও কত বিচিত্র। কেউ জেলে, কেউ কুমার, কেউ কৃষক, কেউ আবার কাজ করে অফিস-আদালতে। সবাই আমরা পরস্পরের বন্ধু। একজন তার কাজ দিয়ে আরেকজনকে সাহায্য করছে। গড়ে তুলছে এই দেশ। ভাব তো কৃষকের কথা। তারা কাজ না করলে আমাদের খাদ্য জোগাত কে? সবাইকে তাই আমাদের শ্রদ্ধা করতে হবে, ভালোবাসতে হবে। সবাই আমাদের আপনজন। আমাদের আছে নানা ধরনের উত্সব। মুসলমানদের রয়েছে দুটি ঈদ, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। হিন্দুদের দুর্গাপূজাসহ আছে নানা উত্সব আর পার্বণ। বৌদ্ধদের আছে বৌদ্ধ পূর্ণিমা। খ্রিস্টানদের আছে ইস্টার সানডে আর বড়দিন। এ ছাড়া রয়েছে নানা উত্সব। পহেলা বৈশাখ-নববর্ষের উত্সব। রয়েছে রাখাইনদের সাংরাই ও চাকমাদের বিজু উত্সব।
১. প্রদত্ত শব্দগুলোর অর্থ লেখ ৫টি ১–৫=৫
ক. সার্থক খ. বৈচিত্র্য গ. প্রকৃতি
ঘ. পার্বত্য ঙ. গৌরব চ. পরস্পর ছ. শ্রদ্ধা
২. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : ২+৪+৪=১০
ক. বাংলাদেশের প্রায় সব মানুষ কোন ভাষায় কথা বলে? বাংলাদেশের গৌরব কীসে? ২
খ. বাংলাদেশের মানুষের পেশা সম্পর্কে কী বলা হয়েছে? তারা কীভাবে দেশকে গড়ে তুলছে? চারটি বাক্যে লেখ। ৪
গ. অনুচ্ছেদে উল্লিখিত বিভিন্ন উত্সব সম্পর্কে চারটি বাক্যে লেখ। ৪
প্রদত্ত অনুচ্ছেদটি পড়ে পাঠ্যবই বহির্ভূত. ৩ ও ৪ নম্বর ক্রমিকের উত্তর লেখ।
একবার বনের পশুদের নাচ দেখিয়ে এক বানরের খুব নাম-যশ হয়েছিল। পশুরা মুগ্ধ হয়ে বানরকে তাদের রাজা করে নিল। কিন্তু রাজা হওয়ার মতো কোনো যোগ্যতাই বানরের ছিল না। বুদ্ধিমান আর পণ্ডিত বলে শেয়ালের নামডাক কিছু কম নয়। তবু তাকে বাদ দিয়ে পশুরা বানরকে রাজা করায় শেয়ালের রাগ গিয়ে পড়ল বানরের ওপর। সে শুধুই বানরকে জব্দ করার ফন্দি আঁটতে লাগল। এক দিন বনের পথে ঘুরতে ঘুরতে শেয়াল দেখল, ঝোপের আড়ালে একটা ফাঁদ পাতা রয়েছে। ফাঁদ চোখে পড়তেই শেয়াল আনন্দে লাফিয়ে উঠল। সে ভাবল, যে করে হোক ওই হাবাগোবা বানরকে এনে এ ফাঁদে ফেলতে হবে। তাহলে জন্মের মতো তার রাজাগিরির সাধ ঘুচবে। তখনই শেয়াল চলে এলো বানরের কাছে। করজোড়ে বলে, মহারাজ, এ অধমকে যদি আপনার সেবা করার সুযোগ দেন তবে ধন্য হই। বানর পায়ের ওপর পা তুলে কলার খোসা ছাড়াচ্ছিল। একটা আস্ত পাকা কলা কোঁৎ করে গিলে ফেলে গম্ভীর মুখে বলল, তোমার মনের ইচ্ছাটা নির্ভয়ে বলে ফেল। শেয়াল বলল, এক জায়গায় খুব ভালো খাবার দেখে এসেছি প্রভু। বনরাজ্যে আপনি ছাড়া এমন খাবারের যোগ্য আর কেউ নেই। যদি দয়া করে অনুমতি করেন, সে জায়গায় আপনাকে নিয়ে যেতে পারি। শেয়ালের চালাকি বানর কিছুই বুঝতে পারল না। সে খুশি হয়ে শেয়ালের সঙ্গে রওনা হলো। মনের খুশি মনে চেপে শেয়াল বানরকে সেই ফাঁদের কাছে ঝোপটা দেখিয়ে বলল, মহারাজ এ ঝোপের পেছনেই সব খাদ্য লুকানো আছে। আপনি এবারে গিয়ে খেতে শুরু করুন। আমি হলাম আপনার দাস, একটু দূরে দাঁড়ানোই ভালো। বোকা বানর শেয়ালের কথা ভুলে সুখাদ্যের লোভে ঝোপের ভিতরে গিয়ে ঢুকল আর ফাঁদে আটকে পড়ল। তখন সে বাঁচাও, বাঁচাও করে চিৎকার করে শেয়ালকে ডাকতে লাগল। শেয়াল বাঁকা হেসে বলল, বানর মশাই, তুমি একটা আকাট মূর্খ। এ বুদ্ধি নিয়ে পশুদের রাজা হওয়া যায় না। শিকারিরা এখনই আসবে। তোমার যোগ্য ব্যবস্থা তারাই করবে।
৩. নিচে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া আছে। উপযুক্ত শব্দ দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ করে উত্তরপত্রে লেখ ১–৫=৫
শব্দ—শব্দার্থ
পশু—জন্তু
বুদ্ধিমান—জ্ঞানী, চালাক
জব্দ—আটক
নিগৃহীত—লাঞ্ছিত
সম্পূর্ণ—পরাভূত
ফন্দি—গুপ্ত কৌশল, মতলব
ফাঁদ—পশুপাখি ধরার যন্ত্র, কৌশল, চক্রান্ত নির্ভয়ে—ভয় না করে।
ক. রাশেদ সব সময় মুন্নাকে— করতে চায়।
খ. রাজা গরিব লোকটিকে—তার কথা বলার অনুমতি দিলেন।
গ. আমাদের শ্রেণিশিক্ষক একজন সৎ ও—।
ঘ. রহিম মিয়া ইঁদুর ধরার জন্য— পেতে রেখেছে।
ঙ. চোরটি পালানোর জন্য —আঁটতে লাগল।
৪. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ : ৫–৩=১৫
ক. কী করে বানরের নাম-যশ হয়েছিল? শেয়াল কেন বানরকে রাজা হিসেবে মেনে নিতে পারল না? চারটি বাক্যে লেখ। ১+৪=৫
খ. কী দেখে শেয়াল আনন্দে লাফিয়ে উঠল? কী বলে সে বানরকে ঝোপের কাছে নিয়ে এল? চারটি বাক্যে লেখ। ১+৪=৫
গ. একজন রাজার দায়িত্ব সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ। ৫
৫। নিচের দাগ দেওয়া শব্দের ক্রিয়াপদগুলোর চলিত রূপ লেখ : ৭টির মধ্যে ৫টি. ১–৫=৫
ক. এক সন্ধ্যায় বনের সব প্রাণী আসিয়া জড় হলো সিংহের গুহায়।
খ. এক মজার বন্ধুর কথা বলা হইয়াছে ‘ফুটবল খেলোয়াড়’ কবিতায়।
গ. মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সিপাহি মুন্সি আবদুর রউফ যুদ্ধে ঝাঁপাইয়া পড়েন।
ঘ. আমরা একটু দেরি করিয়াই মেলায় গেলাম।
ঙ. তবেই তাঁদের ঋণ শোধ করা সম্ভব হইবে।
চ. নকল রানির ভয়ে কাঁপিতে থাকে কাঞ্চনমালা।
ছ. ঝড়ে গাছপালা ভাঙিয়া গেলে ওরা ব্যথা পায় না।
৬। অনুচ্ছেদটি পড়ে কে, কী, কোথায়, কীভাবে, কেন, কখন শব্দগুলো দিয়ে পাঁচটি প্রশ্ন তৈরি করে উত্তরপত্রে লেখ : ১–৫=৫
ইংরেজ আমলের প্রথম দিকে, সুন্দরবনে গন্ডারের সংখ্যাধিক্য ছিল। কিন্তু সেই গন্ডার এখন নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ইংরেজ শাসক ও দেশীয় কর্মচারী এবং স্থানীয় দক্ষ শিকারি সবাই মিলে ক্রমান্বয়ে গন্ডারের বংশ ধ্বংস করেছে। বিখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ভ্রাতা নলিনী ভূষণ রায় ১৮৮৫ সালে সুন্দরবনে গন্ডার দেখেছিলেন বলে জানা যায়। এর পর প্রাণীটি আর দেখা যায়নি। এক সময়ে এখানে হাতিও ছিল, এখন একটিও নেই। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল ছাড়াও জামালপুর-শেরপুর অঞ্চলের গারো পাহাড়ে হাতি দেখা যায়।
৭. নিচের যুক্তবর্ণগুলো ভেঙে দেখাও এবং প্রতিটি যুক্তবর্ণ দিয়ে তৈরি শব্দ দ্বারা একটি করে বাক্য রচনা কর। ২–৫=১০
ক. ত্র্য খ. ক্ষ গ. ম্প ঘ. ত্ম ঙ. স্বচ. ন্দ ছ. ঙ্ক
৮. উপযুক্ত স্থানে বিরাম চিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদটি তোমার উত্তরপত্রে লেখ : ৫
সে সময়ে শীতলক্ষ্যা নদীর পারের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে ছিল সুসভ্য মানুষজনের বসবাস ছিল নগর সভ্যতা পূর্ব দক্ষিণ দিক দিয়ে ভৈরবের মেঘনা হয়ে এখানকার ব্যবসা বাণিজ্য সুদূর জনপদ পর্যন্ত প্রসারিত ছিল
৯. এককথায় প্রকাশ কর : ১–৫=৫
ক. যে কাহিনি কল্পনা করে লেখা হয়
খ. হুংকার দিয়ে ওঠা
গ. মাথা নত করে অভিবাদন করা
ঘ. কেনা গোলাম
ঙ. প্রতি মুহৃর্তে অপেক্ষা করা
চ. পাহারা দেওয়া
ছ. যিনি ইতিহাস জানেন বা লেখেন। (চলবে)