বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : মাহিয়া মাহি

বাস্তব জীবনেও আমি অগ্নিকন্যা

বাস্তব জীবনেও আমি অগ্নিকন্যা

একবিংশ শতকে ঢালিউডে নায়িকা হিসেবে হাতেগোনা কয়েকজন প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। তাঁদের একজন মাহিয়া মাহি। দর্শকের কাছে নিজের আলাদা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।  তাঁর অভিনীত নারীকেন্দ্রিক একাধিক সিনেমার সাফল্যই এর প্রমাণ।  নায়িকা মাহির বলা যত কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

বর্তমানে আপনার ব্যস্ততা চলচ্চিত্র নাকি খাবারের ব্যবসা নিয়ে?

চলচ্চিত্রের টুকিটাকি কাজ মাঝেমধ্যে করা হয়, শিগগিরই নিয়মিত হব। তবে ক্যারিয়ারের এই সময়ে বছরে একটি অথবা দুটি ছবিতে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর খাবারের ব্যবসা করছি শখের বশে। এ কাজটি নিয়েই এখন কমবেশি ব্যস্ত আছি। এক্সপার্ট শেফ নিয়োগ দিয়েছি। খাবারের মানের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র আপস করছি না। পোশাকের ব্যবসাও একেবারে বন্ধ হয়নি। সাময়িক বন্ধ আছে। সেটি মূলত অনলাইনকেন্দ্রিক। নতুন করে পোশাকের ব্যবসা  আবার চালু করার চিন্তাভাবনা আছে।

 

আপনি ঢালিউডের অন্যতম নায়িকা। এই মুহূর্তে ছবি কমিয়ে দিলে চলচ্চিত্রের জন্য ক্ষতি হবে না?

আমি এখনো ভাবিনি ওভাবে। কারণ আমি এখন তো বছরে তিনটা করে ছবি করি। আগামীতে দুটি করে করব। খুব একটা সমস্যা হবে বলে মনে করি না। আর আমি তো সরে যাচ্ছি না। মাত্র একটা ছবি কম করব। এতে আমার জায়গা আরও পোক্ত হবে। আমি মনে করি, এটা আমার সঠিক সিদ্ধান্ত।

 

‘আশীর্বাদ’ ছবির কো-প্রযোজক আপনার বিরুদ্ধে শুটিংয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ আনেন। এ বিষয়ে কী বলবেন?

তাঁর অভিযোগ ঠিক নয়। তিনি যা বলেছেন বিকৃত করে  বলেছেন। আসল ঘটনা জানলে সবাই প্রযোজকের দিকেই আঙুল তুলবে। তবে আমি প্রযোজককে সম্মান করি। একটা ছবি শুধু প্রযোজকের একার নয়। এটা আমাদেরও ছবি। আশীর্বাদ ছবিটি সরকারি অনুদানের ছবি। তাই আর্টিস্টরা অনেক কম পারিশ্রমিক নিয়েছি। কিন্তু সে তুলনায় আমরা সম্মান পাইনি। এই ছবির নির্মাতা মানিক ভাই একজন ভালো মানুষ। তিনি সবকিছু জানেন শুটিংয়ে কি হয়েছে। তিনি যদি বলেন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সত্য তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই। মাথা পেতে নেব সব।

 

প্রযোজনায় আসবেন বলে জানিয়েছিলেন, কখন কাজ শুরু করছেন?

আপাতত নির্মাণে আসার প্রাথমিক কাজ গুছিয়ে নিচ্ছি। এখন তো ভালো ছবি নির্মাণ করলে দর্শক সিনেমা হলে ফিরে। অন্তত গত দুই ঈদের ছবির সাফল্য এই প্রমাণ দেয়। তাই শিগগিরই নির্মাণে আসতে চাই।

 

সামাজিক কর্মকান্ডে আপনাকে সক্রিয় থাকতে দেখা যায়, এ কাজে নিয়মিত থাকছেন?

আমরা যখন যে পেশায়ই থাকি না কেন আমাদের প্রথম পরিচয় হলো আমরা মানুষ। আর মানুষ সবসময় মানুষেরই জন্য। সর্বশেষ জুন মাসে  সিলেটের বন্যাকবলিত মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দিতে স্বামী রাকিব সরকারসহ সিলেটে গেছি। আসলে প্রত্যেক মানুষকে যার যার সাধ্যমতো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত এবং এ কাজকে দায়িত্ব-কর্তব্য মনে করা দরকার। আমি ও আমার স্বামী নিয়মিতভাবে অসহায় মানুষের দুর্দশা লাঘবে তাদের পাশে থাকব।

 

আগামীতে আপনার অভিনীত কোন ছবিগুলো মুক্তি পাচ্ছে?

যতটুকু শুনেছি আগামী তিন মাসের মধ্যেই মুক্তি পাবে আমার দুটি ছবি। এগুলো হলো ‘আশীর্বাদ’ ও ‘যাও পাখি বলো তারে’। দুটি ছবিই পরিচালনা করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। ‘আশীর্বাদ’ ছবিতে আমার সঙ্গে অভিনয় করেছেন জিয়াউল রোশান। ছবিটি মুক্তি পাবে ১৯ সেপ্টেম্বর। অন্যদিকে ‘যাও পাখি বলো তারে’ ছবিতে আমার সঙ্গে আছেন শিপন মিত্র ও আদর আজাদ। এটি মুক্তি পাবে আগামী ৭ অক্টোবর।

 

অভিনয়ের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো প্রাধান্য দেন?

মানসম্পন্ন চলচ্চিত্রের জন্য গল্প, নির্মাতা, লোকেশন, চিত্রায়ণসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে সঠিক নজরদারি প্রয়োজন। একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানই পারে এ বিষয়গুলো সঠিক পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে ভিন্নধর্মী চলচ্চিত্র উপহার দিতে। এ কারণে আমি অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি।

 

মাহির ব্যর্থতা কী?

ব্যর্থতা তো আছেই। চলচ্চিত্রে আসার আগে মডেলিং করেছিলাম। তখন আমাকে বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখিও হতে হয়েছে। কিন্তু আমি অন্ধকার গলি ধরে আলোর ঝলকানি দিতে চাইনি বলে মডেল হতে পারিনি। এ নিয়ে অবশ্য কোনো আক্ষেপও নেই।

 

পর্দায় আপনি কখনো প্রেমিকা আবার কখনো অগ্নিময়ী নারী। পর্দার বাইরে আসলে আপনি  কেমন?

পর্দার বাইরের মাহি অনেক দুষ্টু। অনেক চঞ্চল। সিনেমায় যেরকম দেখা যায়, কখনো কখনো তার চেয়েও বেশি দুষ্টুমি করি। বাস্তব জীবনেও আমি অগ্নিকন্যা। খুবই ঝগড়াটে স্বভাবের মেয়ে আমি। বলতে পারেন ঝগড়া করাটা আমার এক ধরনের শখ। আমি খুব বেশি কথা বলি আর হাসি। আর খুব অল্পতেই রেগে যাই। তবে ফেসবুকিং করতে পছন্দ করি। ফেসবুকে বন্ধুদের সঙ্গে দুষ্টুমি করতে ভালো লাগে।

 

খাবারের ব্যবসা করছেন, নিজে কেমন রান্না করতে পারেন?

রান্না করতে ভালোই পারি। কিন্তু সাধারণত করা হয় না। ঈদ বা কোনো উৎসব ছাড়া রান্না করা হয় না। গরুর মাংস, সবজি, বিরিয়ানিসহ বিভিন্ন খাবার রান্না করতে পারি। নিজের রান্না খেয়ে নিজেই প্রশংসা করি। খুশি লাগার ব্যাপার হলো আমার রান্না খেয়ে কিন্তু সবাই  প্রচুর প্রশংসা করেন।

সর্বশেষ খবর