বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি নিয়ে সংস্কৃতিকর্মীদের উদ্বেগ

শোবিজ প্রতিবেদক

‘শনিবার বিকেল’ মুক্তি নিয়ে সংস্কৃতিকর্মীদের উদ্বেগ

তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আপিল বোর্ডে ঝুলে আছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাটি। সম্প্রতি বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। নড়েচড়ে বসেছেন সবাই। এদিকে সিনেমাটি মুক্তির দাবিতে এক বিবৃতিতে দেশের ১৩০ জন শিল্পমনা বিশিষ্টজন স্বাক্ষরও করেছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাসির উদ্দিন ইউসুফ, মামুনুর রশীদ, সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকি, রাইসুল ইসলাম আসাদ, সারা যাকের, সৈয়দ জামিল আহমেদ, শিমুল ইউসুফ, আফজাল হোসেন, ছটকু আহমেদ, মোরশেদুল ইসলাম, তারিক আনাম খান, আনিসুল হক, শহীদুজ্জামান সেলিম, ফজলুর রহমান বাবু, জাহিদ হাসান,

তৌকীর আহমেদ, ক্যাথরিন মাসুদ, গিয়াস উদ্দিন সেলিম, নুরুল আলম আতিক, ত্রপা মজুমদার, এনামূল করিম নির্ঝর, পিপলু আর খান, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, আহসান হাবীব নাসিম, অপি করিম, আনুশে আনাদিল, ইন্তেখাব দিনার, ওয়াহিদ তারেক, মেজবাউর রহমান সুমন প্রমুখ। এই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা স্বাক্ষরকারীগণ লক্ষ্য করছি, সিনেমা-নাটক-সংগীত, শিল্প-সংস্কৃতির এমন নানা ক্ষেত্রে, নানা সময় হাজির করা হচ্ছে বহুমুখী বাধা- যা আমাদের উদ্বিগ্ন করছে। এ উদ্বেগ আরও বাড়ে যখন দেখি আমাদের বন্ধু-সুহৃদ চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর চলচ্চিত্র ‘শনিবার বিকেল’ বিনা কারণে সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় সেন্সর বোর্ডে আটকে থাকে। সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি ১৭ তারিখ এ বিষয়ে আপিল কমিটির একটি সভা আহ্বান করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এবং সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই ছবিটি দেখেছি এবং বুঝতে অপারগ হচ্ছি কেন এ ছবিটির সঙ্গে এরকম আচরণ করা হচ্ছে। আমরা তাই ছবিটির নির্মাতার হতাশা ও মর্মবেদনা অনুভব করতে পারছি। পৃথিবীতে যখন সেন্সরের ধারণাটি একটি বাতিলযোগ্য পুরনো ধ্যান-ধারণা হিসেবে আলোচিত হচ্ছে, ঠিক তখনই আমরা সেন্সর, দীর্ঘসূত্রতা এবং অজানা কোনো কারণে সময়ের একজন খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকারের কাজ আটকে রেখেছি। এ দেশের নাগরিক ও শিল্পী সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা বলতে চাই, আমাদের প্রজ্ঞা ও বিবেচনায় এই দীর্ঘসূত্রতা আমাদের ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ করে এবং সব কর্তৃপক্ষের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এ মুহূর্তে ‘শনিবার বিকেল’ শুধু একটি চলচ্চিত্র আটকে রাখার বিষয় নয়। এটি সামগ্রিকভাবে দেশীয় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষিতকে অনুধাবন করতে না পারার বাস্তবতা; রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গির অচলায়তা এবং সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতাও নির্দেশ করে, যা কাম্য নয়। কর্তৃপক্ষের এ বিরূপ আচরণ আমাদের ব্যথিত করে। আমরা যেন ভুলে না যাই, ভাষাভিত্তিক জাগরণে বাংলা নামে যে দেশ ৫০ বছর আগে তৈরি করেছি তার মৌল চেতনা যে কোনো কিছুকে আটকে দেওয়ার পরিপন্থী। আপনাদের বোধ এবং প্রজ্ঞার ওপর আমরা এখনো বিশ্বাস, আস্থা হারাইনি।  আমাদের কাজ রাজপথে সংগ্রাম করা নয়, বরং একটি প্রগতিশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিল্প ও শিল্পীর ভূমিকাকে জারি রাখা। আমরা ‘শনিবার বিকেল’র নিঃশর্ত মুক্তি কামনা করি।’

সর্বশেষ খবর