নব্বইয়ের দশকে বড় পর্দায় একে একে এলেন শাবনাজ, মৌসুমী, শাবনূর, পপি ও পূর্ণিমা। বড় পর্দায় অভিনয়ে এসে দর্শকহৃদয় কাঁপিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। ২০০০ সালের প্রথম দিক পর্যন্ত অভিনয়ে সরব ছিলেন তাঁরা। এরপর তাঁদের কেউ চিত্রজগৎ থেকে দূরে, কেউ আবার অনিয়মিতভাবে কাজ করছেন। দর্শকনন্দিত এ নায়িকারা এখন কেমন আছেন, কোথায় আছেন সে খবর জানাচ্ছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ
শাবনাজ
১৯৯১ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা এহতেশাম চলচ্চিত্রে নিয়ে আসেন শাবনাজ নামের একটি মেয়েকে। এ মেয়েটিকে নায়িকা করে তিনি নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র ‘চাঁদনী’। এটি ছিল ওই বছর এবং ওই দশকের সেরা হিট ছবি। এরপর তিনি অনেক সিনেমায় নায়িকা হিসেবে কাজ করেছেন এবং তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। ২০০৪ সালে তার সহশিল্পী চিত্রনায়ক নাঈমকে বিয়ে করে তিনি সংসারী হন এবং অভিনয় ছাড়েন। বর্তমানে স্বামী, সংসার, সন্তান, ধর্ম-কর্ম এবং ঘরের কাজ নিয়েই কাটছে তার দিনকাল। অভিনয়ে আর ফিরবেন না বলে জানান তিনি।
শাবনূর
নব্বই দশকের অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর। এ নায়িকা দীর্ঘ সময় ঢাকাই চলচ্চিত্রে রাজত্ব করেছেন। ১৯৯৩ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী রাতে’ দিয়ে চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু শাবনূরের। ২০১৩ সালে একটি পুত্রসন্তানের জন্মদানের পর অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক শাবনূর সেখানেই থিতু হন এবং দীর্ঘদিন চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকেন। চলতি বছর ‘রঙ্গনা’ ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর দিনই আবার অস্ট্রেলিয়া উড়াল দেন তিনি। জানান, ‘কিছু ব্যবসার কাজ আছে। মাঝে দেশের অবস্থা ভালো না থাকায় ছবির কাজে আর দেশে ফিরতে পারেননি তিনি। শিগগিরই আসবেন।
মৌসুমী
নব্বই দশকে মুক্তি পাওয়া আলোচিত সিনেমা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। এ সিনেমার মধ্য দিয়ে অভিনয়ে আগমন মৌসুমীর। ১৯৯৩ সালে এ সিনেমা করার পর থেকে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। পেয়েছেন সফলতা। তার সঙ্গে জুটি হয়ে সালমান শাহ অনেক কাজও করেছেন। মাঝে অভিনয়ে অনিয়মিত হলেও মৌসুমী বর্তমানে একটি সিনেমার কাজে যুক্তরাষ্ট্র রয়েছেন। এ ছাড়া দেশে তার কয়েকটি ছবি মুক্তির তালিকায় আছে। মৌসুমী জানান, শিগগিরই দেশে আসবেন এবং নতুন ছবির কাজে হাত দেবেন।
পূর্ণিমা
জনপ্রিয়তার দিক থেকে পূর্ণিমাও অনেক এগিয়ে। দীর্ঘ সময় ধরে ঢাকাই সিনেমায় জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে অভিনয় করছেন। মাঝে সংসারে মন দেওয়ায় অভিনয় থেকে দূরে সরেন তিনি। ১৯৯৮ সালে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ দিয়ে পূর্ণিমার অভিষেক ঘটে সিনেমায়। গত কয়েক বছর ধরে আবারও চলচ্চিত্রের অভিনয়ে রয়েছেন তিনি। সর্বশেষ কাজ করেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ছটকু আহমেদের ‘আহারে জীবন’ ছবিতে। ছবিটি গত ঈদে মুক্তি পায়। পূর্ণিমা জানান, নতুন কিছু ছবিতে অভিনয়ের কথা চলছে, ব্যাটে বলে মিললে আবার বড়পর্দায় ফিরবেন তিনি।
পপি
১৯৯৭ সালে সোহানুর রহমান সোহানের ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ ছবি দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক ঘটে পপির। অবশ্য তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি মনতাজুর রহমান আকবরের ‘কুলি’। টানা দুই দশকেরও বেশি সময় জনপ্রিয়তার পথ ধরে নায়িকা হিসেবে কাজ করছেন। ২০১৫ সালের পর হঠাৎ করেই অভিনয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়েন এবং গত প্রায় ৩ বছর ধরে লোকচক্ষুর অন্তরালে রয়েছেন পপি। প্রকাশ্যে তাকে আর দেখাই যাচ্ছে না। গুঞ্জন রয়েছে গোপনে বিয়ে করে সংসারী এবং সন্তানের জননীও হয়েছেন। পপির হঠাৎ অন্তর্ধানের কারণ বেশ কজন নির্মাতার ছবি অসমাপ্ত পড়ে আছে। কারও সঙ্গে যোগাযোগ না করা পপি অধরাই রয়ে গেছেন এখন।