প্রেম চিরন্তন, প্রেম শাশ্বত, জীবনে প্রেম আসে নীরবে। প্রেমিক যুগল হাতে হাত রেখে মনের গভীরে প্রেমের আবির মেখে হারিয়ে যায় তারা ভালোবাসার মহাসমুদ্রে। জীবনে প্রেম বারে বারে আসতে পারে। তবে প্রথম প্রেমের স্মৃতি চিরন্তন। সেই প্রেমের কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ
শাবানা
১৯৭২ সালে মুক্তি পায় শাবানা অভিনীত ‘অবুঝ মন’ ছবিটি। এ ছবিটি দেখে ব্যবসায়ী ওয়াহিদ সাদিক প্রেমে পড়ে যান বিউটি কুইন শাবানার। তিনি নাকি একটানা ৩০ বার ছবিটি দেখেন। এরপর শাবানার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। শাবানাও নাকি সাদিককে দেখে পছন্দ করে ফেলেন। শুরু তাদের প্রেমপর্ব। অবশেষে ১৯৭৪ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তারা।
ফেরদৌস ওয়াহিদ
আমাদের বয়সটা খুবই কম ছিল। একটি মেয়ে আমাদের বাসায় বেড়াতে আসত। আমরা একই পাড়ায় থাকতাম। আমার সামনে যখন আসত তখন আমি বোধকরি অন্ধ হয়ে যেতাম। তাকে আমি আমার প্রস্তাব দিতে পারিনি। ভাবতাম যদি সে আমাকে খারাপ কিছু ভাবে। তাকে আর ভালো লাগার কথা বলার সাহস পাইনি।
শাকিব খান-অপু বিশ্বাস
শাকিব খানের প্রথম প্রেম অপু বিশ্বাস। ২০০৬ সালে ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে জুটি বাঁধেন শাকিব খান-অপু বিশ্বাস। প্রথম ছবিতেই প্রেমের ঝড় ওঠে দুজনের হৃদয়ে। শাকিব গেয়ে ওঠেন ‘আমি তোমার হতে চাই এটা মিথ্যে কোনো গল্প নয়’। দুজনের প্রেম যখন তুঙ্গে তখনই ২০০৮ সালে গোপনে প্রথমে মিরপুরের একটি মাজারে তারপর শাকিবের গুলশানের বাসায় বিয়ের বাঁধনে বাঁধা পড়েন তারা। একসময় ঘরভাঙা ঝড় এসে তছনছ করে দেয় তাদের অনেক সাধের প্রেমের বাগান। ২০১৭ সালে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন দুজন।
ববিতা
১৯৭৬ সালে ‘একমুঠো ভাত’ ছবিতে জুটি বাঁধেন ববিতা-জাফর ইকবাল। এ ছবিতে কাজ করতে গিয়ে শুরু হয় তাদের মন দেওয়া-নেওয়া। সবার আশা ছিল বাস্তব জীবনেও তারা জুটি বাঁধবেন। না, তা আর হয়নি। এ সম্পর্ক ভাঙার জন্য ববিতাই নাকি দায়ী ছিলেন। চলচ্চিত্র জগতে তাদের প্রেম কাহিনির চর্চা এখনো হয়। ববিতাকে হারিয়ে বিরহকাতর জাফর গেয়ে ওঠেন ‘সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী, হয়ে কারও ঘরনি, জেনে রেখো প্রেম কভু মরেনি।’
ফাহমিদা নবী
১৯৭৫ সালে আমি ক্লাস ফাইভে পড়তাম। তখন আমার এক বন্ধু ছিল। ওর নাম শাহেদ। শাহেদ আর আমি এক সঙ্গেই পড়তাম। খেলাধুলা করতাম। ও এত নিষ্পাপ ছিল দেখতে যা বোঝানো যাবে না। এলিফ্যান্ট রোডে আমাদের বাসা কাছাকাছি ছিল। তাই স্কুলের পরও আমরা একসঙ্গে মিশতে পারতাম। ওর সঙ্গে কথা বলতে ভীষণ ভালো লাগত। শেয়ারিং ব্যাপারটা প্রথমে বুঝতে শিখি শাহেদের সঙ্গে মিশে। এটাকে কী প্রেম বলা যায়? ওইটা আসলে একটা ভালো লাগা ছিল। যখন প্রেম কী তা বুঝতে শিখলাম এবং কারও প্রেমে পড়তে চাইলাম একসঙ্গে তিনজনের প্রেমে পড়লাম-সক্রেটিস, রাজা অশোক এবং স্পার্টাকাস।
নাঈম-শাবনাজ
১৯৯১ সালে ‘চাঁদনী’ ছবিতে নতুন জুটি শাবনাজ-নাঈম অভিনয় করেন। পর্দায় প্রেমের ঝড় তুলতে গিয়ে একসময় তাদের বাস্তব জীবনেও প্রেমের বাঁশি বেজে ওঠে। কমপক্ষে তিন বছর লুকিয়ে প্রেম করার পর ১৯৯৪ সালে বিয়েতে সফল হয় সেই প্রেম। আজও পরস্পরের কানে বেজে চলেছে সেই প্রেমের বাঁশি। বারে বারে তারা গেয়ে ওঠেন ‘বন্ধুর বাঁশি বাজেরে আমার কানে কানে।’
মেহজাবীন
আমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে ওমানে। সেখানকার মাসকটের ইন্ডিয়ান স্কুলে আমার প্রথম শিক্ষাজীবন শুরু। আমি একটু টমবয় টাইপের। তাই মেয়েদের পাশাপাশি আমার অনেক ছেলে বন্ধুও ছিল। খেলাধুলা, হৈ-হুল্লোড় করতে বেশ পছন্দ করতাম। আমার এক সহপাঠী বন্ধু আমাকে প্রথম প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তাও বেশ অন্যরকম এক স্টাইলে। স্কুলে আমি প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট চেয়ারে বসতাম। একদিন এসে দেখি, আমার চেয়ারে ভালোবাসার একটি সিম্বল আঁকা।
বিদ্যা সিনহা মিম
ক্লাস এইটে পড়ি। সে ছিল ক্লাসমেট। কোচিং সেন্টারের সিঁড়িতে সে প্রতিদিনই দাঁড়িয়ে থাকত। শুরুতে অপলক তাকিয়ে থাকার মধ্যেই সবকিছু সীমাবদ্ধ ছিল। এর কিছুদিন পর সে চিঠি দেওয়া শুরু করল। চিঠি নিতে না চাইলে সিঁড়ি থেকে সে এক চুলও নড়ত না। কী আর করা, বাধ্য হয়ে তার চিঠি নিতাম। কিন্তু তা নিজের কাছে রাখতাম না। আমার এক বান্ধবী সেই ছেলেটিকে পছন্দ করত। তাকেই সব চিঠি দিয়ে দিতাম। এরপর একদিন অন্যরকম এক চিঠি দিল। সে চিঠি ছিল রক্ত দিয়ে লেখা! এটা দেখে চমকে গিয়েছিলাম।