মহানায়িকা সুচিত্রা সেন আগের চেয়ে ভালো আছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ায় মেয়ে মুনমুন সেন, নাতনি রিয়া ও রাইমা সেনরা একটু দম ফেলতে পারছেন। চিকিৎসকরাও একটু স্বস্তিতে আছেন।
সোমবার খিচুড়ি খেতে চেয়েছিলেন সুচিত্রা। তাই মঙ্গলবার বাড়ি থেকে সুচিত্রার পছন্দের স্বাদে খিচুড়ি গিয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু আর মুখে তুলেননি নায়িকা। তাই দিনভর শুধু রাইলস টিউবেই খাওয়ানো হলো। খুব একটা মুখ খুলছেন না, চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকছেন শুধু। চিকিৎসকদের ধারণা, গত কয়েক দিনের ধকলে কাহিল হয়ে গেছেন। তাই ক্লান্তিতে চোখ বুজে রয়েছেন। তবে সম্পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে তার। এ দিন দুই নাতনি রাইমা ও রিয়া তার শয্যার দু'পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সুচিত্রার চোখ তখন বোজা। ডাক্তাররা সুচিত্রাকে পরীক্ষা করার ছলে বলেন, 'আপনার দু'পাশে দুই সুন্দরী দাঁড়িয়ে। আপনি যাকে ভালবাসেন, তার দিকে তাকান!'
সুচিত্রা মৃদু হেসে তাকালেন!
এ দিনও নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেটরের সাহায্য ছাড়াই ছিলেন মহানায়িকা। তবে অক্সিজেন চলেছে সব সময়েই। রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ দিনভর ৭৮ থেকে ৮৪-র মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। এখনই তাকে আইটিইউ থেকে সরানোর কথা ভাবছেন না চিকিৎসকেরা। তারা জানিয়েছেন, আরও দু'তিন দিন যদি অবস্থার কোনো রকম অবনতি না হয়, তবে তাকে জেনারেল কেবিনে স্থানান্তরিত করা হবে।
সোমবার দুপুরে এন্ডোট্র্যাকিয়াল টিউবটি খুলে দেওয়া হলেও রাইলস টিউব খোলার এখনই কোনো সম্ভাবনা নেই বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। চিকিৎসকদের বক্তব্য, ওষুধের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবারটাই এই মুহূর্তে বেশি প্রয়োজন। তাই সেদিকে নজর রাখছেন তাঁরা। সকালের চা নিজের মুখেই খেয়েছেন। সারা দিনে জল খেতে চেয়েছেন বারবার। গেলাস থেকেই জল খেতে পেরেছেন।
সোমবার সুচিত্রার প্রস্রাবের পরিমাণ কিছুটা কম হওয়ায় কিডনির কর্মক্ষমতা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন চিকিৎসকেরা। এ দিন অবশ্য সে সংশয় কেটেছে। প্রস্রাবের পরিমাণ এ দিন স্বাভাবিক ছিল। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছে। পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়াতে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। এ দিনের পর থেকে আর তার প্রতিদিন রক্ত পরীক্ষা করা হবে না বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। তিন-চার দিন অন্তর পরীক্ষা হবে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সবমিলিয়ে গত কয়েক দিনের তুলনায় এ দিন অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল। গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো অবনতি হয়নি। তবে এখনো সংকট পুরো কাটেনি। আরও ক'দিন না গেলে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাবে না।