ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি তারেক মাসুদের বহনকারী গাড়ির একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে?
হ্যাঁ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কাছে ভিসি চত্বরে তারেকের বহনকারী গাড়ির একটি ভাস্কর্য স্থাপন করব। ২৬ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করা হবে। ওই দিন থেকেই এটি সাধারণ মানুষ দেখতে পারবে।
এই ভাস্কর্য স্থাপনের পেছনে কোনো কারণ আছে?
প্রায়ই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশপাশের এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন অনেকে। তাই নতুন প্রজন্মের মধ্যে নিরাপদ সড়ক চাই বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এটি তৈরি হচ্ছে। এরই মধ্যে ভাস্কযের্র জন্য জায়গাও বরাদ্দ দিয়েছেন ঢাবি কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মাইক্রোবাসটির ওপর প্রলেপ দিয়ে ভাস্কর্যটি সাজানো হচ্ছে। কাজটি তত্ত্বাবধান করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক শিল্পী ঢালী আল মামুন। ল্যান্ডস্কেপ সাজাচ্ছেন স্থপতি সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তারেক মাসুদের অসমাপ্ত স্বপ্নগুলোর কি অবস্থা?
তারেক অনেক স্বপ্ন দেখতেন। তিনি ছিলেন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। আমরা আসলে তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে তিন ধরনের কাজ করছি বর্তমানে। এর মধ্যে রয়েছে প্রকাশনার কাজ, ফিল্ম নির্মাণ এবং একটি ডিজিটাল আর্কাইভ তৈরি করা। এ আর্কাইভ দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা, গবেষক সবার জন্য কাজে লাগবে। এই আর্কাইভে আমরা মুক্তিযুদ্ধের দলিলও রাখছি। ফলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হতে যাচ্ছে। কাজটি ঠিকমতো সম্পন্ন করতে পারলে অনেক কাজে আসবে। মানুষ অনেক সঠিক তথ্য জানতে পারবে। এই বছর আমরা তারেকের আরও একটি বই প্রকাশ করব। এতে স্থান পাবে তারেকের বিভিন্ন সময়ের সাক্ষাৎকার ও বক্তব্য। এছাড়া তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের উপর একটি প্রামাণ্য চিত্রের কাজ শুরু করেছিলেন। তা শেষ করার চেষ্টা করছি আমি।
তারেক মাসুদ স্বপ্নের ফেরিওয়ালা, একই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন চলচ্চিত্রের ফেরিওয়ালাও। তিনি তার সিনেমা নিয়ে সারা দেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন। এ ধরনের কাজ কি আপনারা চালিয়ে যাবেন?
অবশ্যই, কেন নয়। তারেক যেখানে শেষ করেছেন, আমরা সেখান থেকেই শুরু করেছি। এরই মধ্যে আমরা ৪০টিরও বেশি জায়গায় চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছি। এ কাজ চলতে থাকবে। শুধু তাই নয়, তারেক মাসুদ 'সিনেমা হল বাঁচাও' নামে যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, সে আন্দোলনও চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। আমরা বিভিন্ন জেলার সিনেমা হল মালিকদের সঙ্গে বসছি। অর্থ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে চলচ্চিত্র শিল্পটাকে কিভাবে আরও বেশি কর্মমুখর করে তোলা যায়- সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। নতুন সিনেমা হলের জন্য সাত বছরের ট্যাঙ্ ফ্রি ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিনেমা হলের জন্য বিদ্যুৎ বিলের রেট কমানো হয়েছে। এ সব কাজের সঙ্গে আমি এবং আমার প্রতিষ্ঠান যুক্ত ছিল। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য অনেক সুবিধা হবে। চলচ্চিত্র নির্মাণের হার বাড়বে।
বর্তমানে আমাদের চলচ্চিত্র কী অবস্থায় আছে বলে আপনি মনে করেন?
চলচ্চিত্রে যা হওয়ার তাই হয়েছে। এখন আর পেছনে ফিরে তাকালে হবে না। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। বেশ কিছু কাজও শুরু হয়েছে চলচ্চিত্র শিল্পকে উন্নত করার জন্য। অনেকেই এখন এগিয়ে আসছেন। ছবি দেখানোর জন্য জায়গা তৈরি করতে হবে। সে কাজটিও হচ্ছে, আরও একটু সময় লাগবে। রাতারাতি কিছুই হবে না, ধৈর্য ধরতে হবে।
কাগজের ফুল চলচ্চিত্রটির কি অবস্থা?
কাজ তো শুরু করেছি। কিন্তু সব কিছু আবার নতুন করে করতে হচ্ছে। ফলে আমাদের কিছুটা বেশি সময় লাগছে। তবে তারেকের স্বপ্ন 'কাগজের ফুল' এক দিন ফুটবেুই।
আলী আফতাব