কথায় আছে, 'বিপদে বন্ধুর পরিচয়'। এ প্রবাদটি এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন হালের আলোচিত সঙ্গীতশিল্পী ন্যান্সি। গত শনিবার ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন জনপ্রিয় এ শিল্পী। অনেকটা যমের হাত থেকে তিনি ফেরত এসেছেন। আজ দুপুরে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন ন্যান্সি।
গত শনিবার আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে ন্যান্সি 'টক অব দ্য কান্ট্রি'-তে পরিণত হন। মিডিয়া পাড়া থেকে শুরু করে আপামর জনতা পর্যন্ত সকলেই উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন। কিন্তু তাদের এ উৎকণ্ঠা ন্যান্সিকে ছুঁয়ে যাচ্ছে না। অর্থাৎ যাদের কাছে প্রত্যাশা ছিল বেশি তাদের দিক থেকে খুব একটা সাড়া পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ন্যান্সির স্বজনরা। বিশেষ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কাছে এ প্রত্যাশা একটু বেশিই ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস ছাড়া আর কোনো দলীয় নেতা-কর্মী দেখতে যাননি তাকে। গত রবিবার বিকেলে হাসপাতালে ন্যান্সিকে দেখতে যান মির্জা আব্বাস। নিবিঢ় পরিচর্যা কেন্দ্রে ন্যান্সির পাশে নীরবে কিছুটা সময় কাটান তিনি। কথা বলেন চিকিৎসকদের সঙ্গে। এ পর্যন্তই শেষ। এরপর আর কোনো দলীয় সহানুভূতি বা চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়নি দলটির পক্ষ থেকে। এমনটাই জানালেন ন্যান্সির স্বজনরা। অনেকটা আক্ষেপের সুরে ন্যান্সির এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু বললেন, "বিএনপির প্রতি একাত্মতার ঘোষণা এ সঙ্গীতশিল্পীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।"
গত বছরের ২২ অক্টোবর থেকে টানা প্রায় একমাস ন্যান্সিকে নিয়ে মিডিয়াতে ঝড় বয়ে যায়। যে ঝড়ের কারণ ন্যান্সির ফেসবুক স্ট্যাটাস। ফেসবুকে চাঁচাছোলা সেই রাজনৈতিক স্ট্যাটাসের কারণে ন্যান্সি প্রায় মাসদুয়েক ভুগেছেন নানা হয়রানিতে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজ দফতরে ডেকে নিয়ে যান ন্যান্সিকে। জানান সাধুবাদ। দিয়েছেন আশীর্বাদ। সেসময় ন্যান্সি জানিয়েছিলেন, এ ঘটনাটি ছিল তার জীবনের জন্য অনেক সুখের। তবে সেই ক্ষণিক সুখের বিনিময়ে এখন অনেক চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে তাকে। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, একজন প্রফেশনাল আইটি বিশেষজ্ঞ ডেকে 'এনএম ন্যান্সি' নামে নতুন একটি ফ্যান পেইজ খুলেছেন। কারণ, আগেরটি হ্যাক হয়েছে। গেল আট মাসে তিনি পাঁচবার তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করেছেন।
এমনকি ফেসবুকে হ্যাকের এ ঘটনার জন্য বিএনপির প্রতি ন্যান্সির আনুগত্যকে দায়ী করেন কেউ কেউ। তাদের মতে, একটি নির্দিষ্ট দলকে সাপোর্ট করাতেই একঘরে হয়ে পড়েন ন্যান্সি। এছাড়া বিভিন্ন স্টেজ শোতেও হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে তাকে। তাই ন্যান্সির দুঃসময়ে বিএনপি পাশে থাকবে এমনটাই স্বাভাবিক। ন্যান্সির শুভাকাঙ্ক্ষীরা বলছেন, পাশে থাকা মানে শুধু সহানুভূতি নয়, দিতে হবে মানসিক শক্তি ও চিকিৎসার ব্যয়ভার। কারণ বাসায় ফিরলেও ন্যান্সিকে আরও কিছুদিন বিশ্রাম ও চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। গত এক বছরে আর্থিকভাবে খুব একটা স্বচ্ছল নেই ন্যান্সি। এ বিষয়টা বিএনপিকে মাথায় রাখতে হবে। এটাই সবার প্রত্যাশা।