রাজ্জাকের প্রথম নায়িকা ছিলাম আমি। ১৯৬৮ সালে জহির রায়হান আমাদের জুটি করে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র 'বেহুলা'। এটি নায়ক হিসেবে রাজ্জাকের প্রথম এবং নায়িকা হিসেবে আমার দ্বিতীয় ছবি। এর আগে সুভাষ দত্তের 'কাগজের নৌকা' চলচ্চিত্রে প্রথম নায়িকা হই। রাজ্জাকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে দেখলাম চুপচাপ এবং অসম্ভব ভদ্র একজন মানুষ তিনি। অভিনয় করার সময় জড়তায় ভুগতেন। জহির রায়হান আমাকে বললেন, 'ম্যাডাম কথাবার্তা বলে তাকে একটু ফ্রি করে নেন।' শুটিং শেষে আমরা পুরো টিম তার সঙ্গে গল্প আর মজা করে আস্তে আস্তে তার জড়তা কাটিয়ে তুললাম। ছবিটি রিলিজের পর বাম্পার হিট ব্যবসা করে। এতে আমরাও স্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেলাম। এরপর আমাদের জুটি করে জহির রায়হান একের পর এক ছবি নির্মাণ করতে শুরু করেন। সেগুলোও ব্যবসাসফল হয়। অন্য নির্মাতারাও আমাদের নিয়ে ছবি নির্মাণ শুরু করে। আমরা ছাড়া আর কোনো জনপ্রিয় জুটি ছিল না তখন। তাই কোনো প্রযোজক ছবি নির্মাণ করতে এলে প্রথমেই জানতে চাইতেন আমরা এই ছবিতে থাকব কিনা। আমরা থাকলেই বিনা বাক্যে ছবির কাজ শুরু হয়ে যেত। তারপর এক সময় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো, জহির রায়হান হারিয়ে গেলেন। আমিও অভিনয় থেকে সরে এলাম। কিন্তু রাজ্জাকের সঙ্গে যেখানেই দেখা হয় সেই আগের মতোই আমাকে সম্মান দেখান, মূল্যায়ন করেন। আসলে বরাবরই দেখে আসছি রাজ্জাক একজন ভদ্র এবং নিয়ম-নীতি মেনে চলা- এক কথায় অসাধারণ একজন ভালো মানুষ। 'বেহুলা' থেকে আজ পর্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। বাকি জীবন এই সফলতাকে ধরে রেখে আরও উন্নত কাজ সবাইকে উপহার দিয়ে যাবেন বলে প্রত্যাশা করি। তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। এরকম জন্মদিন তার জীবনে আরও অনেকবার আসুক।