টিআইয়ের আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপারসন ফ্রাঁসোয়া ভ্যালেরিয়াঁর বলেছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা কোথায় গেছে তা চিহ্নিত করে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম চালানো জরুরি। এ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। আর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কেমন হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশে এখনো দুর্নীতি চলছে, তবে জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর এটি কমেছে। টিআইবি-টিআই ইউকে সহযোগিতার ভিত্তিতে ইউকে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে। ইতোমধ্যে অনেকের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ হয়েছে।’ গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ভ্যালেরিয়াঁরের বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে এর আয়োজন করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংবাদ সম্মেলনে ফ্রাঁসোয়া ভ্যালেরিয়াঁর বলেন, ‘সাংবাদিকরা না থাকলে গণতন্ত্র থাকে না, আর গণতন্ত্র ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে লড়াইও সম্ভব নয়। আমি গত বছর থেকেই ছাত্র-জনতার আন্দোলন নিবিড়ভাবে অনুসরণ করেছি, যেখানে তরুণ, নারী, শ্রমজীবীসহ সাধারণ মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন আমরা সারা বিশ্বে স্বৈরতন্ত্রের উত্থানের কথা শুনছি, তখন বাংলাদেশে ঘটেছে উল্টোটা। এজন্যই আমাদের বৈশ্বিক নাগরিকসমাজ বাংলাদেশকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখছে। এখানে সংস্কারকার্যক্রম চলছে, সংস্কার কমিশন, ঐকমত্য কমিশন ও অন্যান্য পদক্ষেপ যার অনেকটি টিআই বাংলাদেশের সুপারিশে হয়েছে। এ সংস্কারগুলো টেকসই হতে হবে। রাষ্ট্রের কাঠামো ও ক্ষমতার প্রয়োগে গভীর পরিবর্তন দরকার। আমি বিশ্বাস করি নাগরিকসমাজের সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে এ প্রচেষ্টা সফল হবে।’ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘কিছুটা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। ব্যাংক ছিল অর্থ পাচারের অন্যতম খাত। সেখানে কিছু সংস্কার হয়েছে, যে কারণে আগে ঢালাওভাবে এখানে জালিয়াতির সুযোগ ছিল, সেটা বন্ধ হয়েছে। যে অ্যাকটররা জড়িত ছিল, তাদের অনেকেই বিচারের মুখোমুখি হয়েছে কিংবা দেশের বাইরে আছে। তাদের সেই ভূমিকা নেই বললেই চলে। যদিও নতুন অ্যাকটরের জন্ম হয়নি বা হচ্ছে না, এটা আমরা বলতে পারব না।’ দেশের ব্যাংক খাতে আরও অনেক সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলেও অভিমত তাঁর।