নাট্য সংগঠন স্বপ্নদলের দর্শকনন্দিত ও আলোচিত প্রযোজনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'চিত্রাঙ্গদা'-র ৩৬তম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে আজ সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির এঙ্পেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে। গবেষণাগার নাট্যরীতিতে 'চিত্রাঙ্গদা' প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন। রবীন্দ্রনাথ ১৮৯২-এ মাত্র ৩১ বছর বয়সে মহাভারতের চিত্রাঙ্গদা উপাখ্যান রূপক ধরে আধুনিক সময়ে মানবের অন্তর্দ্বন্দ্বের প্রতিচ্ছায়ারূপে রচনা করেন কাব্যনাট্য 'চিত্রাঙ্গদা'। এর প্রায় ৪৪ বছর পরে ১৯৩৬-এ তার ৭৫ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন নৃত্যনাট্য 'চিত্রাঙ্গদা', যেটি দেশে-বিদেশে অসংখ্য দলের মঞ্চায়নের মাধ্যমে সুপরিচিত। অন্যদিকে কাব্যনাট্য 'চিত্রাঙ্গদা' একটি দুরূহ ও অপ্রচলিত রচনা হিসেবে স্বীকৃত ছিল, এমনকি রবীন্দ্রনাথও কখনোই এটি মঞ্চায়নে উদ্যোগী হননি। 'চিত্রাঙ্গদা'-র নাট্যকাহিনীতে উপস্থাপিত হয়- মহাবীর অর্জুন সত্যপালনের জন্য একযুগ ব্রহ্মচর্যব্রত গ্রহণ করে মণিপুর বনে এসেছেন। মণিপুর রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদা অর্জুনের প্রেমে উদ্বেলিত হলেও অর্জুন রূপহীন চিত্রাঙ্গদাকে প্রত্যাখ্যান করেন। অপমানিত চিত্রাঙ্গদা প্রেমের দেবতা মদন এবং যৌবনের দেবতা বসন্তের সহায়তায় এক বছরের জন্য অপরূপ সুন্দরীতে রূপান্তরিত হন। অর্জুন এবারে যথারীতি চিত্রাঙ্গদার প্রেমে পড়েন। কিন্তু অর্জুনকে লাভ করেও চিত্রাঙ্গদার অন্তর্দ্বন্দ্বে ক্ষত-বিক্ষত হতে থাকে- অর্জুন প্রকৃতপক্ষে কাকে ভালোবাসেন, চিত্রাঙ্গদার বাহ্যিক রূপ নাকি তার প্রকৃত অস্তিত্বকে? অতঃপর চিত্রাঙ্গদার অন্তর্দ্বন্দ্ব আর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে এ সত্য উপলব্ধি করা যায় যে, বাইরের অবয়বের চেয়ে নারী-পুরুষের চারিত্রশক্তি অনেক বেশি মূল্যবান এবং এতেই প্রকৃতপক্ষে আত্মার স্থায়ী পরিচয়।