কান চলচ্চিত্র উৎসব নিয়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। সারা পৃথিবী থেকে চলচ্চিত্রকর্মীরা এখানে যোগ দেন। আর এ কারণেই অস্কারের থেকেও এগিয়ে কান।
এবারও কান উৎসবে যোগ দিয়েছেন চলচ্চিত্রকর্মীরা। চলচ্চিত্রের ইউরোপিয়ান ডেরায় এবার এশিয়ান উচ্ছ্বাস খুব বেশি চোখে পড়ছে। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভারত, তাইওয়ান আর ফিলিপাইনের এক বা একাধিক ছবি স্থান পেয়েছে কানের ৬৮তম আসরে।
চলচ্চিত্রের অবিরাম প্রদর্শনী
প্রায় প্রতিদিন এশিয়ান ছবির প্রদর্শনী হচ্ছে। এশিয়ানরা তো বটেই, অন্যান্য মহাদেশের চলচ্চিত্রকর্মীরাও আগ্রহ নিয়ে প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন। উৎসবের অষ্টম দিনে বেলা সাড়ে ১১টায় গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে প্রতিযোগিতা বিভাগে হয়ে গেল চীনা নির্মাতা জিয়া ঝ্যাং পরিচালিত 'মাউন্টেনস মে ডিপার্ট' ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনী। এ নিয়ে চতুর্থবার কানের প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পেল ঝ্যাং-কির ছবি।
উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে এশীয় অঞ্চল থেকে আরও আছে তাইওয়ানের হু সিয়াও সিয়েনের 'দ্য অ্যাসাসিন'। এটি দেখানো হয়েছে গতকাল। এ ছাড়া আগেই জাপানের কোরি-ইদা হিরোকাজুর 'আওয়ার লিটল সিস্টার্স' ছবির প্রদর্শনী হয়ে গেছে।
আনসার্টেন-এ এশিয়ান নারী নির্মাতারা
আনসার্টেন রিগার্ড বিভাগে এশীয়দের উপস্থিতি লক্ষণীয়। গতকাল ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার নারী নির্মাতা শিন সু ওনের 'ম্যাডোনা' প্রদর্শনী। এটি তার তৃতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনী চিত্র। ছবিটি নির্মাণে অ্যাডভার্ড মাঞ্চের একই নামের সৃষ্টিকর্ম অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে তাকে। আনসার্টেন রিগার্ড বিভাগে এশিয়া থেকে নারী নির্মাতাদের মধ্যে আরও স্থান পেয়েছে জাপানের নাওমি কাওয়াসের 'অ্যান'। এর ইংরেজি নাম- 'সুইট রেড বিন পেস্ট'। একই বিভাগে গত কয়েকদিনে দেখানো এশীয় অন্য দুটি ছবি হলো জাপানের কুরোসাওয়া কিওশির 'জার্নি টু দ্য শোর' এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ওহ-সিউঙ ওক পরিচালিত 'দ্য শেমলেস'। এশিয়ার আরেক দেশ ফিলিপাইনের ব্রিলান্তে মেনদোজা পরিচালিত 'তাকলুব' প্রদর্শিত হয় আগের দিন।
চোখের কোণে অশ্রু
আনসার্টেন রিগার্ড বিভাগে সাল বাজিনে প্রদর্শিত ভারতীয় নির্মাতা নিরাজ ঘাইবানের 'মাসান' মুগ্ধ করেছে সমালোচক ও দর্শকদের। তাই সবাই পাঁচ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান শিল্পীদের। এ সময় আনন্দাশ্রু দেখা যায় ছবিটির অভিনেত্রী রিচা চাড্ডা ও শ্বেতা ত্রিপতির চোখে। টুইটারে নিরাজ বলেন, 'অবিরাম প্রশংসার বৃষ্টিতে ভিজে আবেগাপ্লুুত হয়ে পড়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ।' হিন্দি শব্দ 'মাসান'-এর অর্থ শ্মশান। আনসার্টেন রিগার্ডে ভারতের একটি পাঞ্জাবি চলচ্চিত্রও আছে। 'চাউথি কুত' [দ্য ফোর্থ থট] নামের ছবিটি পরিচালনা করেছেন গুরবিন্দর সিং। অভিনয়ে নিখিল সাহানি, ভিকি কৌশল ও সঞ্জয় মিশ্র। এটিও প্রশংসিত হয়েছে।
আরও বিভাগে এশিয়া
উৎসবে শুরুর দিকে মধ্যরাতের আয়োজনে আগের দিন ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার হঙ ওন চ্যানের 'অফিস'। কান ক্ল্যাসিকসে আছে ফুকাসাকু কিনজির 'ব্যাটেলস উইদাউথ অনার অ্যান্ড হিউম্যানিটি' [১৯৭৩], হু কিংয়ের 'অ্যা টাচ অব জেন' [১৯৭১], মিজোগুচি কেনজির 'দ্য স্টোরি অব দ্য লাস্ট রাইস্যানথিমাম' [১৯৩৯]। এ ছাড়া সাগরপাড়ে দেখানো হয়েছে আকিরা কুরোসাওয়ার 'রান' [১৯৮৫]। সব মিলিয়ে এশিয়ান উচ্ছ্বাস চলছে।