নজরুল জন্ম জয়ন্তীতে কী করছেন?
এরই মধ্যে বেশ কিছু অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনের কথা বলছে। কিন্তু আমার কেন জানি এখন কোথাও যেতে ইচ্ছা করে না। নিজেকে ইচ্ছা করেই অনেকটা গুটিয়ে রেখেছি। এর পেছনে কিছু কষ্টও লুকিয়ে আছে। আমাদের দেশে একটি বিষয় দেখে আমি অবাক হই। এই নজরুল কিংবা রবীন্দ্রনাথের জন্ম ও প্রয়াণ দিবসে আমাদের মনে পড়ে। এটি খুবই কষ্টকর। আমরা কী পারি না সারা বছর এই চর্চাটা করতে।
বেশ কিছু সময় ধরে শ্রোতারা আপনার কোনো নতুন অ্যালবাম পায় না, কেন?
বর্তমানের অডিও বাজার নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তারপরও শ্রোতাদের কথা মাথায় রেখে আগামী মাস থেকে একটি নতুন অ্যালবামের কাজ শুরু করব। আর আমি মনে করি, মানুষ যাকে ভালোবাসে, যার গান ভালোবাসে, চলতে চলতে একটা পর্যায়ে এসে তাকে একটু থেমে থেমেই চলতে হয়। শ্রোতারা যে আমাকে মিস করে, এটা আমার জন্য একটা বিরাট পাওয়া। আমিও তাদের মিস করি।
প্রাতিষ্ঠানিক নজরুল-চর্চা সম্পর্কে কিছু বলুন?
সব গানেরই একটি প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা থাকা ভালো। আর নজরুল হচ্ছেন আমাদের জাতীয় কবি। তার সম্পর্কে ভালো করে না জেনে বা প্রতিষ্ঠানিক না জেনে গান করা উচিত নয়। আমার আব্বা কবি তালিম হোসেন এ দেশে প্রাতিষ্ঠানিক নজরুল-চর্চার পথিকৃত। আব্বার আশীর্বাণী আমার পথ-চলার পাথেয়।
নতুনরা নজরুলের গান কেমন করছে বলে আপনি মনে করেন?
আমার নতুনদের গান ভালো লাগে। কিছু দিন আগে একটি অনুষ্ঠানে এক তরুণ কণ্ঠশিল্পীর কণ্ঠে নজরুলের একটি গান শুনে প্রাণটা ভরে গেল। আমার মনে হয় নতুনরা সামনে আরও ভালো করবে। তবে গান হচ্ছে গুরুমুখী বিদ্যা। এখন অনেকেই গুরুর কাছে দীক্ষা না নিয়েই গাইতে চায়। এতে তাদের স্থায়িত্ব বলে কিছু থাকে না। আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে, গানের ক্ষেত্রে তালিম বা চর্চা অত্যাবশ্যক। এ ব্যাপারটি বর্তমান প্রজন্মের শিল্পীদের অনেকের কাছে উপেক্ষিত। এ অবস্থা পরিহার করতে হবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
আমি কখনো পরিকল্পনা করে কিছু করিনি। শিল্পীরা এ রকমই, তাদের কাজ ঠিক পরিকল্পনা করে হয় না। দেশ-কাল ছাড়িয়ে শিল্পীর হৃদয়ের সীমানা। তবে আমি এ কথা বলতে পারি- 'যতদিন আমার গান গাইবার শক্তি থাকে, তত দিনই আমি গেয়ে যাব।'
আলী আফতাব