বড় পর্দায় বিদ্যা সিনহা মিমের শুরুটা জল দিয়ে। ২০০৮ সাল। ছবির নাম 'আমার আছে জল'। এরপর জল বেশি গড়ায়নি। হাতেগোনা ছবি। তারপরেও শোবিজ অঙ্গনে জল রঙে অাঁকা হয়ে গেল মিমের ছবি। সেই ছবি এখনো স্পষ্ট। ধুলা জমেনি। মলিন হয়নি এতটুকু। ঈদে আবার জল রঙ নিয়ে আসছেন বড় পর্দা রাঙাতে। 'পদ্ম পাতার জল'। 'তুমি হলে সেই শিকারি, যে শিকারের আগেই ঢিল মেরে উড়িয়ে দাও পাখি, তারপর ছুড়ো গুলি...'। পদ্ম বাইজির এই আক্ষেপ তার হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে থাকা প্রেমকে শাণিত করে। জমিদার নন্দন আসে তার জলসা ঘরে। নাচের মুদ্রা আর কণ্ঠের ব্যঞ্জনায় মন ভরায়। বেলা শেষে নিজের ঠিকানায় হাঁটে। এ কেমন প্রেম। পদ্মর আক্ষেপটা এখানে এসে রুদ্র রূপ ধারণ করে। একসময় উল্টোরথে হাঁটা প্রেমকে ছলনা বলে অস্বীকার করতে দ্বিধা করে না। তার কথায় নারীর ছলনা বোঝার বয়সে কখনো পৌঁছায় না পুরুষ। এত গেল পদ্ম পাতার জল ছবির পদ্মর দুঃখগাথা কথামালা।
মিম কিন্তু অল্প হাঁটা পথে বিদেশও জয় করে নিয়েছেন। কাজ করছেন কলকাতার বড় পর্দায়। রাজ চন্দের পরিচালনা। ছবির নাম 'প্রোডাকশন নাম্বার ১২'। নায়ক সোহম। এরপর শুরু করবেন অঞ্জন দত্তের 'মন বাকসো' ছবিতে।
লাক্স চ্যানেল আই ২০০৭ সুপারস্টার মিমের শোবিজে পথচলার বয়স বেশি নয়। আঙ্গুলের করা গুনে মাত্র আট বছর। শিশু বয়স বলা চলে। কিন্তু হাঁটার শিশু বয়সেই কাজের যৌবন ছুঁয়েছেন তিনি। মিমের নিজের কাছেও নেই তার আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তার হিসাব। তাই সাদামাটাভাবেই বলেন, সব ধরনের চরিত্রে কাজ করতে চাই। অথচ অনলাইনে তার ফলোয়ারের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। সম্প্র্রতি কলকাতায় গিয়েছিলেন ছবির কাজে। ফাঁকে শপিংয়ে বের হওয়া। ভেবেছিলেন এখানেতো কেউ আমাকে চেনে না। বিনা উপদ্রবে মনের মতো করে কেনাকাটাটা সেরে নেই। ওমা একি, মানুষগুলো কেমন যেন চেনা চেনা চোখে তাকাচ্ছে। জোড়া জোড়া চোখ আমার ওপর দৃষ্টি ফেলছে। পরক্ষণেই সম্বিত ফিরে পাই। হবেই না বা কেন। এখনতো খোলা আকাশের যুগ। নেট সার্চ করলেই পৃথিবীটা হাতের নাগালে এসে পড়ে। হয়তো অনলাইনে ওরা আমাকে দেখেছে। এখন নেটে দেখা মানুষটাকে চোখে দেখার সঙ্গে মিলিয়ে নিচ্ছে।
তাহলে কি বলা যায়, সত্যি মিমের পরিচয় দেশের কাঁটাতার ছিঁড়েছে। মানে জল গড়িয়েছে বিদেশের মাটিতেও। ভেবে আনমনে পুলকিত হন জলের শিল্পী মিম। আর মনে মনে খিস্তি আওড়ে বলেন, জল বড় বেরসিক, সীমানা বোঝে না, বোঝার ধারও ধারে না। গড়িয়ে গড়িয়ে কোথা থেকে কোথায় চলে এলো। আহা লাজে মরি মরি!