১৮ জুন তারিখটা যেন বাংলাদেশের জন্যই বরাদ্দ ছিল! ঢাকায় যখন মুস্তাফিজ নামের এক বিস্ময়ের ৫ উইকেট নিয়ে ভারত বধের উদযাপনে মাতোয়ারা তখন ৯ হাজার কিলোমিটার দূরের দেশ পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারসোতে চলছে বাংলাদেশ নিয়ে মাতামাতি! বিশ্বের অন্যতম বড় পর্যটনবিষয়ক চলচ্চিত্র উৎসব ফিল্ম আর্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম মাতোয়ারা করে বাংলাদেশ হাতে তুলে নিয়েছে সর্বোচ্চ পাঁচটি পুরস্কার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামকরা তথ্যচিত্র নির্মাতারা হেটস অফ করে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশকে! বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের অর্থায়নে নির্মিত 'বিউটিফুল বাংলাদেশ- স্কুল অফ লাইফ' এবং 'বিউটিফুল বাংলাদেশ- ল্যান্ড অফ রিভার' চারটি এবং নিউইয়র্কভিত্তিক বাংলা টেলিভিশন টিবিএনটুয়েন্টিফোরকে দেওয়া হয়েছে পর্যটন শিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা।
এ বছর বাংলাদেশের নদী নিয়ে বানানো খ্যাতিমান নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিম নির্মিত 'বিউটিফুল বাংলাদেশ- ল্যান্ড অফ রিভার' সেরা টেলিভিশন বিজ্ঞাপন চিত্র হিসেবে দুটি এবং সেরা মিউজিকের জন্য একটি পুরস্কার লাভ করে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন পোল্যান্ডের বাংলাদেশি দূত ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ওমর ফারুক। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'পৃথিবীকে এখনই জানান দেওয়ার সময় বাংলাদেশ পর্যটনের জন্য তৈরি। ইউরোপের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ বাংলাদেশে ভ্রমণ করার বিষয়ে নতুন করে জানার জন্য'।
ব্রিটিশ বাংলাদেশি নির্মাতা মইনুল হোসেন মুকুল নির্মিত ১০ মিনিটের তথ্যচিত্র 'বিউটিফুল বাংলাদেশ- স্কুল অফ লাইফ' ২০১২ সালে সেরা পুরস্কার পাওয়ায় এ বছর নির্মাতা হিসেবে তার কাছে পুরস্কার ও সার্টিফিকেট হস্তান্তর করা হয়। এ ছাড়া নিউইয়র্কভিত্তিক বাংলা টেলিভিশন টিবিএনটুয়েন্টিফোরের ডিরেক্টর অব ইউরোপ হিসেবে পুরস্কারও গ্রহণ করেন তিনি। মইনুল হোসেন মুকুল তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, 'সকল কৃতিত্ব বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং আমার ছবির নেপথ্যের কারিগর, ক্যামেরাম্যান, ভিডিও এডিটর, গ্রাফিঙ্ ডিজাইনারসহ বাকি যারা ছিলেন তাদের। তবে পর্যটন নিয়ে ছবি বানানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এই ছবিগুলো মূলধারার মিডিয়াতে কীভাবে নিয়ে আসা যায় সেটাও দেখতে হবে'।
বাংলাদেশের দুজনের হাতেই পুরস্কার তুলে দেন ফেস্টিভ্যালের বিচারক ২০০৮ সালে 'টম অ্যান্ড ওল্ফ' ছবির জন্য অস্কার পাওয়া প্রযোজক ঝুমুতসকি, ফেস্টিভ্যালের আয়োজক কমিটির হেড অব ডিরেক্টর ইভা কুটুস, ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল কমিটির চেয়ারম্যান আলেকজান্দ্রা কেমেল। আয়োজক কমিটি তাদের বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, বিউটিফুল বাংলাদেশ ২০১২ সালে পুরস্কার পাওয়ার পর পৃথিবীর বহু দেশ এটিকে অনুকরণ করছে। এখন একই টাইটেলে বিভিন্ন দেশ তাদের পর্যটনকে কেন্দ্র করে ছবি বানাচ্ছে।
বিদেশ-বিভুঁইয়ে শতাধিক বোদ্ধা চলচ্চিত্র নির্মাতার সামনে নিজের দেশের নামে গুণকীর্তন শুনলে গর্বে বুক ফুলে উঠে উপস্থিত সবার।