ঢাকার চলচ্চিত্রে এ সময়ে যে কজন নায়িকা কাজ করছেন তাদের মধ্যে ব্যস্ততার দিক দিয়ে এগিয়ে আছেন তিন তারকা। তারা হলেন- অপু বিশ্বাস, মাহী ও ববি। এই তিন কন্যাই এগিয়ে নিচ্ছেন ঢাকার চলচ্চিত্র। তবে এই তিনজনের মধ্যে আবার জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে এখনো শীর্ষে রয়েছেন অপু বিশ্বাস। মানে ঢাকার ছবির নায়িকাদের ব্যস্ততার দৌড়ে এগিয়ে আছেন অপু। গত ঈদেও সেটা নতুন করে আবার প্রমাণিত হয়েছে। তার অভিনীত 'লাভ ম্যারেজ' সুপার হিট হয়েছে।
ঢালিউডে নায়িকা সংকটকালে অপু বিশ্বাসের আগমন। ২০০৫ সালে আমজাদ হোসেনের 'কাল সকালে' ছবিটি দিয়ে বড় পর্দায় অপুর যাত্রা শুরু। তখন মৌসুমী, শাবনূর, পূর্ণিমা, পপি ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে অভিনয় থেকে দূরে সরতে শুরু করেছেন। নির্মাতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিল। নির্ভর করার মতো নায়িকার বড়ই অভাব। চিত্র জগতে নায়িকা সংকটে চলছে হাহাকার। এরই মাঝে এলেন অপু। কিন্তু শুরুতেই সরাসরি নায়িকা নয়। প্রথম ছবিতে অপু ছিলেন সহ-নায়িকা। পরের বছর অর্থাৎ ২০০৬ সালে 'কোটি টাকার কাবিন' ছবিতে প্রধান নায়িকা হয়ে এলেন তিনি। শুধু আসা নয়। রীতিমতো ঝড় তুললেন। অপুকে দর্শক ব্যাপকভাবে গ্রহণ করল। নির্মাতাদের কপালের ভাঁজ মুছে গেল। তখন তাদের মুখে শুধুই প্রাপ্তির হাসি। তারা স্বস্তি ও নিঃশ্বাস ফেললেন। তারপর বড় পর্দার নায়িকা মানে শুধুই অপু বিশ্বাস। দীর্ঘ ১১ বছরেও কমেনি তার এতটুকু চাহিদা। ১০ বছরে মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ৪৯টি ছবি। আর এখন কাজ করছেন সম্রাট, রাজা বাবু, রাজা ৪২০, মাই ডার্লিং, বসগীরী, ভালোবাসা ২০১৫তে। চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বাজিকর ছবিতে। আরও প্রস্তাব আছে। এ সপ্তাহের মধ্যে তার হাতে থাকা ছবির সংখ্যা এক ডজনের ঘর ছাড়াবে। মানে আকাশ-পাতাল ব্যস্ততা আর সমান জনপ্রিয়তার পথ ধরে সর সর করে এগিয়ে চলেছেন ব্যস্ত নায়িকা অপু বিশ্বাস। ১১ বছর ধরে সমান ব্যস্ততা আর জনপ্রিয়তার পথে হাঁটার রহস্য কি অপুর। কী এমন দর্শক মোহনের জাদু আছে তার হাতে। এমন প্রশ্নের জবাবে মন কাড়া হাসি দিয়ে অপু বলেন, সবার আগে বুঝতে হবে দর্শক কী চায়। তারপর অভিনয়ে সিনসিয়ার হতে হবে। মানে নিজেকে ভুলে চরিত্রের মধ্যে ডুব দিতে হবে। সব শেষে মনে রাখতে হবে নায়িকা বলতে দর্শক কী বোঝে। অর্থাৎ তাদের চোখে নায়িকা মানে স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা। তাই দৈহিক সৌন্দর্যের প্রতি সচেতন হতে হবে। যা আমি করেছি। মাঝে প্রায় এক বছর অভিনয়ে বিরতি দিয়ে ক্লান্তি ঝেড়ে ফুরফুরে হয়ে ফিরেছি। ফলাফলের অংকটা দর্শক নিজ হাতে কষে দিয়েছে। মানে নম্বর পেয়েছি একশতে একশ। পর্দায় একটু অন্যরকম অপুকে দেখে দর্শক তৃপ্তির হাসি হেসেছে। নির্মাতারাও বলেছেন ওয়াও। তাই দর্শক মনে লম্বা সময় ধরে নায়িকা হয়ে থাকা আমার মনে হয় খুব একটা কঠিন কাজ নয়। মুক্ত ঝরা হাসি দিয়ে বললেন দর্শকপ্রিয় নায়িকা অপু বিশ্বাস।
অপুর পাশাপাশি অন্য যে কজন উল্লেখ করার মতো নায়িকা এখন অভিনয় করছেন তাদেরও হাতে থাকা ছবির সংখ্যা অপুর তুলনায় অনেক কম। যেমন ববি কাজ করছেন এবং চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন এমন ছবির সংখ্যা মাত্র ৫টি। এগুলো হলো- ওয়ান ওয়ে, রাজা বাবু, মাল্টা, পিকানক ও রক্ষা। ববি চলচ্চিত্রে আসেন ২০১০ সালে। তার প্রথম মুক্তি প্রাপ্ত ছবি হলো 'খোঁজ দ্য সার্চ'। এরপর এখন পর্যন্ত এই নায়িকার ১০টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। আর মাহীর হাতে রয়েছে মাত্র তিনটি ছবি। এগুলো হলো- অনেক দামে কেনা, ফিরিয়ে দাও আমার প্রেম এবং কোর্ট ম্যারেজ। মাহীর চিত্র জগতে আগমন ২০১২ সালে। তার অভিনীত ও মুক্তি পাওয়া প্রথম ছবি হলো- 'ভালোবাসার রঙ'। এখন পর্যন্ত এই নায়িকার ১৪টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। এদিকে অপুর পর সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী দুই অভিনেত্রীই হলেন ববি আর মাহী। তারা এরই মাঝে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণও করেছেন। অল্প দিনেই দর্শকের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন। তবে ববির থেকে এদিক দিয়ে এগিয়ে মাহী। তিনি একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়ে চলেছেন। আর নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উচ্চতায়। ববিও চেষ্টা করছেন।