প্রয়াত জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলায় পুনর্তদন্ত আটকে গেছে। এখন আর এ মামলায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) নতুন করে তদন্ত করতে পারবে না। এর ফলে আগের তদন্ত প্রতিবেদনই বহাল রইল।
আজ রবিবার ঢাকার বিশেষ জজ ৬-এর বিচারক ইমরুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা ফৌজদারি রিভিশন মামলা মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
নিহত সালমান শাহের মায়ের পক্ষের আইনজীবী ফারুখ হোসেন জানান, রাষ্ট্রপক্ষের রিভিশন মামলা আদালত মঞ্জুর করেছেন। এতে আর নতুন করে র্যাব তদন্ত করতে পারবে না। শেষ তদন্তই বহাল থাকবে।
আইনজীবী বলেন, ''আমরা এ আদেশে সন্তুষ্ট নই। আমরা উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে যাব।''
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জনপ্রিয় চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ নিহত হন। সে সময় তার বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা দায়ের করেন।
পরে সালমানের বাবা ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই তার ছেলের মৃত্যু অপমৃত্যু নয় বরং হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি অভিযোগ করেন।
ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিএমএম আদালত অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে হত্যার অভিযোগটি একসঙ্গে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।
পরবর্তী সময়ে একই বছরের ৩ নভেম্বর সিআইডি ঘটনাটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করেন সিআইডি। পরবর্তী সময়ে একই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালত সিআইডি পুলিশের দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন।
কিন্তু সিআইডির দাখিলকৃত প্রতিবেদনে সালমানের বাবা সন্তুষ্ট না হয়ে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা দায়ের করেন।
ওই রিভিশন মামলার ওপর শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটিকে ফের বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন।
এর পর প্রায় ১২ বছর ধরে এ মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) বিকাশ কুমার সাহার কাছে মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তী সময়ে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালতে আরেকটি নারাজি দাখিল করেন, যা বিচারক শুনানি শেষে এ মামলাটি র্যাবকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ