পাকিস্তানি মডেল কান্দিল বেলুচকে হত্যার দায়ে তার ২৫ বছর বয়সী ভাই মুহাম্মদ ওয়াসিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রায়ের পর ওয়াসিমের আইনজীবী সর্দার মেহবুব বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ওয়াসিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
রায়ে এই মামলার অন্য আসামি বেলুচের আরও দুই ভাইসহ ছয়জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
২০১৬ সালের জুলাইতে ‘অনার কিলিং’-এর শিকার হন ২৬ বছর বয়সী ওই তারকা। কান্দিল বেলুচকে মুলতানের ভাড়া বাড়িতে গত ১৬ জুলাই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। হত্যার তিন বছর পর এই রায় দিলেন আদালত। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
পাকিস্তানে সামাজিক মাধ্যমে পশ্চিমা-ধাঁচের পোশাক পরা ছবি পোস্ট করে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তারকা হয়ে উঠেছিলেন কান্দিল বেলুচ। কিন্তু এতে তার ওপর ক্ষিপ্ত হন তার ভাই মুহাম্মদ ওয়াসিম। নিজের বোনকে গলা টিপে হত্যা করেন তিনি।
২০১৬ সালে সাংবাদিকদের সামনে বোনকে হত্যার অভিযোগ স্বীকার করেন মুহাম্মদ ওয়াসিম। পুলিশের পক্ষ থেকে করা ওই সংবাদ সম্মেলনে হত্যার কারণ হিসেবে ওয়াসিম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বোনের উপস্থিতি পরিবারের অসম্মান এনেছিল। পরিবারের সম্মান রক্ষা করতেই কান্দিল বেলুচকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
পরে তার পিতামাতাই এ হত্যাকাণ্ডের জন্যে ছেলেকে অভিযুক্ত করে পুলিশের কাছে মামলা করেন। কান্দিলের পিতা মোহাম্মদ আজিম বলেন, "আমার মেয়েটি যা কিছু অর্জন করেছে তা দেখে আমার ছেলে খুব একটা খুশি ছিলো না।"
মৃত্যুর কিছুদিন আগে কান্দিল বেলুচ পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ এক মুসলিম নেতার সাথে তার নিজের একটি ছবি পোস্ট করে বিতর্কের সৃষ্টি করেন। ওই ছবিটি বহু মানুষ শেয়ার করেছে। ফেসবুকে তার ছিলো সাত লাখ ফলোয়ার। তার আসল নাম ফৌজিয়া আজিম। এক সময় তাকে ডাকা হতো 'পাকিস্তানের কিম কার্দাশিয়ান’ নামে।
কান্দিল বেলুচ খুন হবার দুদিন আগে ১৪ জুলাই ফেসবুকে লিখেছিলেন, "আমি আধুনিক যুগের একজন নারীবাদী। আমি সাম্যে বিশ্বাস করি। নারী হিসেবে আমি কেমন হবো সেটা আমাকেই ঠিক করতে হবে।"
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত